বিদেশ থেকে আসা কিছু ব্যক্তি সরকার নির্দেশিত কোয়ারেন্টিন শর্ত সঠিকভাবে মানছেন না। অনেকেই মিথ্যা তথ্য ও গুজব রটিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
তারা বলেছে, কেউ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বাধা দিলে বা নির্দেশ পালনে অসম্মতি জানালে তাকে তিন মাস কারাদণ্ড, অনূর্ধ্ব ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।
করোনাভাইরাসের মতো সংক্রমণ রোগ নিয়ন্ত্রণে হোম কোয়ারেন্টিন বা স্বেচ্ছায় গৃহবাস সবচেয়ে ভালো উপায় বলে মন্তব্য করেছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
এদিকে লক্ষণ দেখা দিলে আইইডিসিআরে না এসে বাসা থেকে ফোন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। আক্রান্ত রোগীদের সেবাদানে প্রস্তুত ৫ বিভাগের ১৪ হাসপাতালে ১৩৫০ শয্যা। চিকিৎসাধীন করোনাভাইরাস আক্রান্ত তিনজনের একজন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
ভাইরাসটির সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৩০ বছরের নিচের কারও এ রোগে মৃত্যু হয়নি। তাই দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্য বিভাগের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণার পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে আসা কিছু প্রবাসী বা তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিবর্গ স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক আরোপিত কোয়ারেন্টিনের শর্ত সঠিকভাবে প্রতিপালন করছেন না। অনেকেই মিথ্যা তথ্য ও গুজব রটিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সবাইকে বর্ণিত আইন অনুযায়ী এবং নির্দেশিত পন্থায় যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানাচ্ছে। ব্যত্যয়ের ক্ষেত্রে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন-২০১৮-এর শাস্তিমূলক ধারা প্রয়োগ করা হবে।
আইনের ধারা-২৫-এ বলা হয়েছে, দায়িত্ব পালনে বাধা ও নির্দেশ পালনে অসম্মতি জানালে অপরাধ হবে। এ জন্য তাকে দণ্ড দেয়া যাবে ২৫-এর (১) যদি কোনো ব্যক্তি ক. মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে বাধা দেন বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, এবং খ. সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশ পালনে অসম্মতি জানান, তবে ওই ব্যক্তির অনুরূপ কাজ দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি (এই ধারার) উপধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করেন, তবে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ধারা-২৬: মিথ্যা বা ভুল তথ্য দেয়ার অপরাধ ও দণ্ড ১. যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা থাকার পরও ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্য দেন তাহলে ওই ব্যক্তির অনুরূপ কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
২. যদি কোনো ব্যক্তি (এই ধারার) উপধারা (১)-এর অধীন কোনো অপরাধ করেন, তাহলে তিনি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ধারা-২৭: ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ- এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার ও আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণকে একটি বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের চলমান প্রস্তুতি এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। জনসাধারণের আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সর্বোচ্চ সতর্কতার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদফতর ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮-এর কিছু ধারা প্রয়োগের প্রয়োজন হতে পারে।
আইন অনুযায়ী যা স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধিকারের মধ্যে রয়েছে: ধারা-১(চ): বাসগৃহ, অন্যান্য গৃহ, ক্লিনিক, হাসপাতাল এবং রোগ নির্ণয় কেন্দ্র বা কোনো স্থাপনায় সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেবা প্রদান করলে বা অনুরূপ রোগে সংক্রমণের আধার হিসেবে বিবেচিত হলে উক্ত স্থান বা স্থাপনা পরিদর্শন ও তদনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
ধারা-১(জ): সংক্রামক রোগের তথ্য আছে এমন কোনো ব্যক্তিকে উক্ত রোগের বিষয়ে অধিদফতরে পাঠাতে হবে। ধারা-১(ট): সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট হাসপাতাল, অস্থায়ী হাসপাতাল, স্থাপনা বা গৃহে অন্তরীণ রাখা বা পৃথককরণ (Isolation); ধারা-১(ত): সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে উড়োজাহাজ, জাহাজ, জলযান, বাস, ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন দেশে আগমন, নির্গমন বা দেশের অভ্যন্তরে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচল নিষিদ্ধকরণ।
ধারা-১০: সংক্রামক রোগের তথ্য প্রদান: ১. যদি কোনো চিকিৎসক সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন এবং উক্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি, কোনো বাসগৃহ, প্রাঙ্গণ বা এলাকায় সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব সম্পর্কে অবহিত হন, তাহলে তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে অবহিত করবেন ২. যদি কোনো বোর্ডিং, আবাসিক হোটেল বা অস্থায়ী বাসস্থানের মালিক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির যুক্তিসঙ্গত কারণে ধারণা হয় যে, উক্ত স্থানে বসবাসকারী কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে তিনি অনতিবিলম্বে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসককে অবহিত করবেন।
ধারা-১১: সংক্রমিত এলাকা ঘোষণা প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, ইত্যাদি ২. মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর যদি প্রতীয়মান হয়, যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাৎক্ষণিক কোনো সংক্রামক রোগ সীমিত বা নির্মূল করা সম্ভব নয়, তাহলে তিনি সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা সংক্রমিত স্থানে অন্য কোনো ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ, সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
ধারা-১৪: রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে সাময়িক বিছিন্নকরণ- ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীরা যদি মনে করে, কোনো সংক্রমিত ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন করা না হলে তার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তি সংক্রমিত হতে পারে, তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে অন্য কোনো স্থানে স্থানান্তর বা জনবিচ্ছিন্ন করা যাবে।
ধারা-১৮: যানবাহন জীবাণুমুক্ত করার আদেশ প্রদানের ক্ষমতা- ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী যদি বিশ্বাস করে যে, কোনো যানবাহন সংক্রামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে বা সংক্রামক জীবাণুর উপস্থিতি রয়েছে, তাহলে তিনি উক্ত যানবাহন জীবাণুমুক্তকরণে গাড়ির মালিক বা স্বত্বাধিকারী বা তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ প্রদান করতে পারবেন।
ধারা-২০: মৃতদেহের সৎকার- ১. যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণ করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তির মৃতদেহ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নির্দেশনা মোতাবেক দাফন বা সৎকার করতে হবে।
সারা দেশে পরীক্ষাগার দরকার নেই : স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন সারা দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষাগার তৈরির প্রয়োজন নেই। কারণ, ভাইরাস শনাক্তের সঙ্গে চিকিৎসার কোনো সম্পর্ক নেই। কোথাও সন্দেহজনক রোগী পাওয়া গেলে অধিদফতরের কর্মীরা নমুনা সংগ্রহ করবেন। এ ধরনের পরীক্ষা সারা দেশে সম্প্রসারিত হলে সংশ্লিষ্টদের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে।
তিনি বলেন, কেউ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত কোনো মিথ্যা তথ্য দেবেন না। এতে সমস্যার সৃষ্টি হবে।
অধ্যাপক আজাদ মাস্ক তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশের বিভিন্ন ভাইরোলজি ল্যাবে কর্মরত গবেষকদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়েছে। পপলিনের কাপড় দিয়ে তিনটি স্তরবিশিষ্ট এ মাস্ক তৈরি করা যাবে। মাস্ক পরার জন্য পপলিনের ফিতা থাকতে হবে। একবার ব্যবহার করে সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ও শুকিয়ে মাস্কটি পুনরায় ব্যবহার করা যাবে।
আইইডিসিআরের ব্রিফিং : এক সপ্তাহ আগে দেশে যে তিনজনকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল, সুস্থ হয়ে ওঠায় তাদের একজন বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট।
শুক্রবার মহাখালীর স্বাস্থ্য ভবনে অনুষ্ঠিত আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, তিনজনের মধ্যে দু’জনের পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তাদের শরীরে এখন করোনাভাইরাস নেই। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি পরীক্ষায় তাদের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুসারে তারা এখন পুরোপুরি সুস্থ। আরেকজনের পারিবারিক সমস্যা থাকায় তিনি এখনও হাসপাতালে রয়েছেন। তবে তৃতীয় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে এখনও ভাইরাসের সংক্রমণ রয়ে গেছে।
অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, বাংলাদেশে নতুন করে আর কারও মধ্যে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। আইইডিসিআর সব প্রস্তুতিই নিয়ে রেখেছে। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে মোট আটজনকে ‘আইসোলেশনে’ রাখা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে মোট ১৮৭ জনের। তবে ওই তিনজন ছাড়া নতুন করে কারও শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
ভ্রমণ বাতিলের সিদ্ধান্ত সরকারের : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জাং রানা বলেছেন, ফ্লাইটে ভ্রমণ বাতিলের সিদ্ধান্তের এখতিয়ার বাংলাদেশ সরকারের। যখন সরকার মনে করবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ভ্রমণ বাতিল করা প্রয়োজন, তখন এ ঘোষণা দিতে পারে।
শুক্রবার রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য ভবনে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. বর্ধন বলেন, সদস্যভুক্ত সব দেশকে ইন্টারন্যাশনাল হেলথ রেগুলেশনস (আইএইচআর) অনুসারে কী কারণে ভ্রমণ বাতিল করা হল তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে বিস্তারিত জানাতে হবে। তবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ফ্লাইট বাতিলের কোনো প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যেসব দেশ ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তাদের সবাইকে যুক্তিসঙ্গত কারণ লিখে জানাতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ রোগটি প্রতিরোধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম। যারা ফ্লাইটে ভ্রমণ করছে তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে গিয়ে ভ্রমণ তথ্য পড়ে দেখতে পারেন, তাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা হবে।
দেশব্যাপী হাসপাতালগুলোয় আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত : ঢাকা মহানগরীর ৬টি হাসপাতালে ৪০০ শয্যা, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২টি হাসপাতালে ১৫০ শয্যা, সিলেট মহানগরীতে ২টি হাসপাতালে ২০০ শয্যা, বরিশাল মহানগরীতে ২টি হাসপাতালে ৪০০ শয্যা এবং রংপুর মহানগরীতে ২টি হাসপাতালে ২০০ শয্যা কোভিড-১৯ সংক্রমিত ব্যক্তিদের আইসোলেশনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দেশের ৫ বিভাগে ১৪টি হাসপাতালে ১৩৫০ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কোভিড-১৯-এর উপসর্গ রয়েছে বা সন্দেহভাজনদের প্রতি নির্দেশনা : যেসব দেশে কোভিড-১৯-এর স্থানীয় সংক্রমণ ঘটেছে, সে দেশ থেকে আসা যাত্রীদের (দেশি-বিদেশি যে কোনো নাগরিক) ১৪ দিন স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে থাকার অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তাদের কারও কোভিড-১৯-এর লক্ষণ দেখা গেলে অন্য কোথাও না গিয়ে আইইডিসিআরের হটলাইনে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্থাপিত হটলাইনগুলো- স্বাস্থ্য বাতায়নের হটলাইন নম্বর : ১৬২৬৩, আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর : ০১৫৫০০৬৪৯০১-৫, ০১৪০১১৮৪৫৫১, ০১৪০১১৮৪৫৫৪, ০১৪০১১৮৪৫৫৫, ০১৪০১১৮৪৫৫৬, ০১৪০১১৮৪৫৫৯, ০১৪০১১৮৪৫৬০, ০১৪০১১৮৪৫৬৩, ০১৪০১১৮৪৫৬৮, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে করোনাভাইরাস পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ দেশে স্থানীয় সংক্রমণ ঘটিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯-কে বিশ্ব মহামারী ঘোষণা করেছে। তাই যে দেশে আছেন, যেখানে আছেন সেখানেই অবস্থান করুন। আরোহণ, ট্রানজিট ও অবতরণের বিমান বন্দরসমূহের টার্মিনাল এবং বিমানের ভেতরে যে কোনো যাত্রী/ক্রু কোভিড-১৯ সংক্রমিত যাত্রী/ক্রু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেন।
সংক্রমিত যাত্রী/ক্রু যে দেশে অবতরণ করবেন সে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রথমেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে পরিবারের সদস্যদের মাঝে। নিজেকে ও প্রিয়জনদের এ সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে অত্যাবশ্যকীয় নয়, এমন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।