বন্যা ও আবহাওয়ার কারণে রোপা আমনের আবাদ সব এলাকায় এক সময়ে শুরু হয়নি। যে এলাকায় আমন চাষের অপটিমাম পিরিয়ড পার হয়েছে সেখানকার কৃষক সবজি চাষে নেমে পড়েছে। বগুড়া সদর ও শিবগঞ্জ এলাকার কৃষক এবার আগেই ফুলকপি ও পাতাকপি চাষ শুরু করেছে। এরপর হবে অন্যান্য সবজি চা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার উপপরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, সরকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সব কৃষককে সহযোগিতা দিচ্ছে। বগুড়া ছাড়াও ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুরের ৪ হাজার হেক্টর জামিতে চারা তৈরি হয়েছে। এসব চারা বগুড়ার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ১৭ হাজার হেক্টরের কৃষককে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এ কারণে এবার বগুড়া অঞ্চলে সবজি আবাদের টার্গেট ৮শ’ হেক্টর অতিক্রম করবে। আর তাই উৎপাদনও হবে বেশি।
মহাস্থান এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, আগস্ট মাসের মধ্যভাগে আমন চারা রোপণ করলে ভালো ফলন হয়। তারপরও আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণ অনুযায়ী মহাস্থান, শিবগঞ্জ, আমতলি, চন্ডিহারা এবং বগুড়া সদরের বেশিরভাগ কৃষক সবজি আবাদ শুরু করেছে। একটি সবজি ফসল ঘরে তোলার পর আরেকটি সবজি চাষ শুরু করা যায়। এভাবে অনেক কৃষক আমন আবাদের বদলে কয়েকটি সবজি চাষ করবে। এই সময়ে সবজি মাঠে আছে ফুলকপি,বাঁধাকপি, মুলা, পালংশাক ও লালশাক। এরপর আলু, টমেটো, করলা, ঢেঁড়শ, সিম, বরবটি, চিচিঙ্গা ও অন্যান্য সবজি আবাদ হবে। তিনি আরও জানান, আগে অঞ্চলভিত্তিক ফসল ফলত। এখন আবাদের ধরন যেমন পাল্টেছে তেমনই ফসলের বহুমুখী জাতও এসেছে। আগে সিম মিলতো শীতের আগে। বর্তমানে সিম, টম্যাটো, চিচিঙ্গা ও করলা প্রায় সকল মৌসুমেই ফলে। কৃষক প্রায়োগিক অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিজেরাই মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। বগুড়ার শেরপুর ও ধুনট এলাকায় টম্যাটোর আবাদ ভাল হয়।
বগুড়ার দীঘলকান্দি এলাকার কৃষক মন্তেজার জানান, ১৪ শতক জমিতে আগামজাতের ফুলকপির ২ হাজার চারা রোপণ করেছেন। ২ মাসের মধ্যে এই ফুলকপি বাজারে বিক্রি করা যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ১৮ হাজারের বেশি ফুলকপি তুলতে পারবেন। এরপরই নেমে পড়বেন আলু আবাদে। সবজি চারা নার্সারির মালিক আব্দুল আজিজ জানান, তিনি আগাম সবজি আবাদের দিকে লক্ষ্য রেখে একমাস আগেই চারা উৎপাদন করেছেন। প্রতিহাজার ফুলকপি ও বাঁধাকপির চারা বিক্রি করেন ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকায়। বগুড়া ছাড়াও দিনাজপুর,নওগাঁ, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের লোকজন চারা কিনে নিয়ে যান।