ওআইসির সমর্থনে গাম্বিয়া জাতিসঙ্ঘের গণহত্যার সনদ ভঙের অভিযোগে গত ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজেতে মামলা করে। গাম্বিয়ার অভিযোগ, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে, যার প্রক্রিয়া আজো অব্যাহত রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) করা মামলায় গাম্বিয়াকে সহায়তা দেয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহ করবে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। এ লক্ষ্যে আগামী ৩ ও ৪ এপ্রিল নাইজারে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রতিশ্রুতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল জেদ্দাতে অনুষ্ঠিত ওআইসি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে দেয়া আইসিজের আদেশকে স্বাগত জানিয়ে বলা হয়, এই আদেশ বিশ্বে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার রক্ষায় ঐতিহাসিক আইনি নজির স্থাপন করেছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-নির্যাতন বন্ধ, তাদের বাস্তুচ্যুতিরোধ এবং গণহত্যার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আলামতগুলো সংরক্ষণ করার জন্য গত ২৩ জানুয়ারি মিয়ানমারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে আইসিজে। নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা অভিযোগের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আইসিজে এ আদেশ দেন।
আদেশ বাস্তবায়নে মিয়ানমার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা চার মাসের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে। এরপর অভিযোগের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারকে ছয় মাস অন্তর প্রতিবেদন দিতে হবে। একই সাথে গাম্বিয়াকে এ সব প্রতিবেদন সরবরাহ করতে হবে, যাতে দেশটি তাদের মতামত দিতে পারে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকের সাইডলাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য গঠিত ওআইসি অ্যাডহক মিনিস্ট্রিাল কমিটির সাথে আলোচনা করেন। এই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। গাম্বিয়ার এ ভূমিকার প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রসচিব। তিনি রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে প্রত্যাবাসনের জন্য কমিটির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে রাজনৈতিক সমর্থন চান।