চলতি বছরের বছরের মার্চ পর্যন্ত সব তাফসির কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান সময়ের মিজানুর রহমান আজহারী।
এ সময়ে গবেষণার কাজে তিনি মালয়েশিয়ায় চলে যাচ্ছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
আজহারী মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর তাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
গত ২৯ জানুয়ারি তার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে আজহারী লেখেন, ‘পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে এখানেই এবছরের তাফসির প্রোগামের ইতি টানতে হচ্ছে। তাই, মার্চ পর্যন্ত আমার বাকি প্রোগ্রামগুলো স্থগিত করা হল। রিসার্চের কাজে আবারও মালয়েশিয়া ফিরে যাচ্ছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুযোগ করে দিলে আবারও দেখা হবে ও কথা হবে ইনশাআল্লাহ।’
এরপর থেকে তিনি আর কোন ওয়াজ মাহফিলে যাননি।
বিসিসি বাংলা জানিয়েছে, আজহারী ইতিমধ্যেই মালয়েশিয়া চলে গেছেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন। তবে এ খবর তার দিক থেকে নিশ্চিত করা যায়নি।
বাংলাদেশে ধর্মীয় বক্তাদের একটি সমিতি রয়েছে। ওই সমিতির কয়েকজন নেতা এবং আজহারীর ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আজহারী মালয়েশিয়া চলে গেছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন। এর পর তাদের কারো সঙ্গে আজহারীর যোগাযোগ হয়নি।
কুমিল্লায় আজহারীর পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে, ৩০ জানুয়ারির পর থেকে আজহারীর সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। তারা ধারণা করছেন, আজহারী মালয়েশিয়া চলে গেছেন।
তবে আজহারীর সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।
এদিকে হঠাৎ করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কারণ কী- এ প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব পাওয়া যায়নি। তবে ফেসবুকে আজহারী নিজে ‘পারিপর্শ্বিক কিছু কারণের’ কথা উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু সেই কারণগুলো কী তা উল্লেখ করেননি তিনি। শুধু এটুকুই বলেছেন, রিসার্চ বা গবেষণার কাজে তিনি মালয়েশিয়া যাচ্ছেন এবং মার্চ মাস পর্যন্ত তার মাহফিল করা বন্ধ থাকবে।
আজহারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, সবশেষ দুটি সাক্ষাতের সময় আজহারী তার কাছে মাহফিল করতে বিভিন্ন জায়গায় বাধার সম্মুখীন হওয়ার কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক মাস ধরেই আজহারীকে নিয়ে আলোচনা চলছিল। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জয়পুরহাটে তার এক মাহফিলে ধর্মান্তরের একটি ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়।
এ বছর জানুয়ারি মাসে লক্ষ্মীপুরে তারই এক মাহফিলে ১২ জন ভারতীয় নাগরিকে ধর্মান্তরের এক ঘটনাও আলোচনার সৃষ্টি করে।
গত ২৪ জানুয়ারি লক্ষীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার পানপাড়া গ্রামে আজহারীর মাহফিলে একই পরিবারের মোট ১২ জন সদস্য এক সঙ্গে
ইসলাম গ্রহণ করেন। আলোচিত এই হিন্দু পরিবারটি এসেছিল ভারত থেকে। বাংলাদেশের পুলিশ ১২ জনকেই আটক করে, এবং তাদের ভারতে ফেরত পাঠানো হয়।
সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী সম্প্রতি আজহারীকে জামায়াত-সংশ্লিষ্ট বলে অভিযোগ তোলার পর তা নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল।