বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যু জেলখানায় হয় তাহলে লাশের ওজন বহন করার ক্ষমতা শেখ হাসিনার নেই। তিনি (খালেদা জিয়া) কোনো আপস, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা বা প্যারোলে মুক্তি নেবেন না।
আজ শনিবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির প্রতিবাদে এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জিয়া শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় সংসদ। সরকারের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, বর্তমান প্রজন্মকে যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার শিক্ষা দিচ্ছেন। আগামীতে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে, অপেক্ষা করুন। বিএনপি চেয়ারপারসন আপসহীন নেত্রী এই উপাধি খারিজ করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে সরকার- এমন মন্তব্যও করে গয়েশ্বর।
জিয়া শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় সংসদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ সংগঠনটির নেতারা বক্তব্য রাখেন।
গয়েশ্বর বলেন, জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী শক্তি একত্রিত করেছিলেন, দেশপ্রেমী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। যার দেশপ্রেম নেই, সে তো দেশের কিছু হলে প্রতিবাদ করতে পারবে না। দেশপ্রেমিকদের সমবেত করার জন্যই জিয়াউর রহমান মাঠে মাঠে ঘুরেছেন। আজ দেশাত্মবোধের অভাব। দেশপ্রেমিক লোক আছে, জনগণ আছে। কিন্তু দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতা নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন কত মামলার রায় হয় কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলার রায় হয় না। আদালত বিব্রতবোধ করেন। আজ যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন তারা একদিন এর পরিণতি ভোগ করবেন।
গয়েশ্বর বলেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিকে লালন করেন, প্রশয় দেন সেই দেশে ছোটখাটো দু-একটা টোকাই ধরে কিছু সময়ের জন্য চমক সৃষ্টি করা যেতে পারে। প্রকৃত অর্থে দুর্নীতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা যায় না।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি এই জনসমর্থনহীন সরকার, ভোটারবিহীন সরকার অর্থনৈতিক সংকট, ব্যাংক খাত নিঃস্ব করার মধ্য দিয়ে দেশকে একটি দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করছে। পরিস্থিতি থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য ছোটখাটো খুচরা নাটক করছে।
গয়েশ্বর বলেন, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার হিসাব অনুযায়ী দেশে ৭৬ হাজার কোটিপতি রয়েছেন। পাঁচ বছর আগে যা ছিল ১৯ হাজার। যে পরিমাণে টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে সেই হিসাব করলে দেশে কোটিপতির সংখ্যা কত হবে তার ঠিক নেই। কোটিপতিদের তালিকা প্রকাশ করা হলে দেখা যাবে সবাই আওয়ামী লীগ করেন। আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ কোটিপতি হয়নি। সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নের অপর নাম এখন দুর্নীতি। যেভাবে হচ্ছে ভবিষ্যতে তা বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। এ টাকা পরিশোধ করতে হবে জনগণকে।
এ দিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ইচ্ছে মতো বাড়ানো হয়েছে। তাদের বেতন দিতে গিয়ে জুলুম-অত্যাচার করা হচ্ছে জনগণ ও ব্যবসায়ীদের ওপর। এমন কোনো ব্যবসায়ী সমিতি নেই যা নীরবে চাঁদা দিতে হচ্ছে না।
ওই আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সরকার যখন রাষ্ট্রকে ট্রাস্ট বানিয়ে ফেলে তখন এর পরিণতি ভালো হয় না। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক যে সংস্কৃতি তৈরি করছে এর শেষ পরিণতি আপনাদের হবে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করা হবে।