মহামারী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, রোজার ছুটির সঙ্গে বর্তমানের ছুটি মিলিয়ে ঈদের পর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
অর্থাৎ করোনার প্রকোপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ৩০ মে পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা অব্যাহত রাখতে টেলিভিশনে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে সরকার।
এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমাদের এখনকার অগ্রাধিকার হচ্ছে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।
দেশে কোভিড-১৯ রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকায় অফিস-আদালত ও চলাচল বন্ধ রেখে ঘরে থাকার মেয়াদ আরেক দফায় বাড়ানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা শুক্রবার দুপুরে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি বাড়ানো হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ সংক্রান্ত ফাইল অনুমোদন হয়ে এলেই আদেশ জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর আগে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার ১৭ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়।
অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণার পর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির মেয়াদ ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এদিকে সাধারণ ছুটি আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ল।
অবশ্য এখনো এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জানি করা হয়নি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেয়া হয়েছিল। এরপর ছুটি বাড়িয়ে তা ১১ এপ্রিল করা হয়।
ছুটি তৃতীয় দফা বাড়িয়ে করা হয় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত চতুর্থ দফা ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
দেশে কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তের পরীক্ষা বাড়ছে, বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে সরকার ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসে সরকার।
বাতিল হয়েছে পহেলা বৈশাখের সরকারি আয়োজনও। এদিকে এক দিনে আরও ছয়জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ জন।
আর শুক্রবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আরও ৯৪ জনের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে আক্রান্তের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২৪ জন।
গত এক দিনে নতুন করে কারও সুস্থ হওয়ার খবর আসেনি। এখন পর্যন্ত মোট ৩৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনাও উপস্থিত ছিলেন ব্রিফিংয়ে।
আরো পড়ুন : শিক্ষা