করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪ ও গাইবান্ধা-৩ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ভোট চলছে।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। এর মধ্যে ঢাকা-১০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও বাকি দুটি আসনে ব্যালট পেপারে ভোট নেয়া হচ্ছে।

বাগেরহাট-৪ আসন ছাড়া বাকি দুটিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছে।

বাগেরহাট-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি এ তিনটি আসনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি।

এদিকে নির্বাচনের পরিবেশ ভালো রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। যুগান্তরকে তারা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় প্রচার শেষ হয়েছে। শুক্রবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশও ভালো রয়েছে।

তবে করোনাভাইরাসের কারণে ভোটারদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। কোথাও কোথাও মাইকিং করে জনগণকে সচেতনভাবে ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের বাইরে ব্যানার টানিয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ঢাকা-১০ : সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস পদত্যাগ করায় ঢাকা-১০ আসনটি গত ২৯ ডিসেম্বর শূন্য ঘোষণা করা হয়।

রাজধানীর ধানমণ্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান, শেরেবাংলা ও লালবাগ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন। তারা হলেন : আওয়ামী লীগের শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিএনপির শেখ রবিউল আলম, জাতীয় পার্টির হাজী মো. শাহজাহান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের কাজী মুহাম্মদ আবদুর রহিম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মিজানুর রহমান।

এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ২১ হাজার ২৭৫ জন, ভোটকেন্দ্র ১১৭টি ও ভোটকক্ষ ৭৭৬টি। এ আসনটিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে। ভোটকেন্দ্রের ঝুঁকি বিবেচনায় পুলিশ ও আনসারের ১৪-১৬ জন সদস্য মোতায়েন করা হবে। নির্বাচনী এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। থাকবে র‌্যাবের টিমও।

এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থাকায় আমরা বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রতিটি ভোটকক্ষে জীবাণুনাশক ও টিস্যু রাখা হবে। ভোটারদের হাত ধুয়ে ভোট দিতে এবং ভোট দেয়ার পর আবারও হাত ধোয়ার অনুরোধ জানিয়ে ব্যানার টানানো হয়েছে।

বাগেরহাট-৪ : সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া বাগেরহাট-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের আমিরুল ইসলাম মিলন ও জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রি।

বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়। ফলে দুই প্রার্থীর মধ্যেই হবে লড়াই। এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ১৬ হাজার ৫১০ জন, ভোটকেন্দ্র ১৪৩টি ও ভোটকক্ষ ৬২৯টি।

আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখভালে ২ জন জুডিশিয়াল ও ২৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমেছেন।

এ আসনের ১৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৩টিই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ৭০৫ জন পুলিশ ও ১ হাজার ৭১৬ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রের বাইরে পুলিশ, এপিবিএন ও আনসারের ২১টি মোবাইল ও ১০টি স্ট্রাইকিং টিম, ১০ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের ১০টি টিম রয়েছে।

এ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুচ আলী যুগান্তরকে বলেন, ভোটের পরিবেশ ভালো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দিচ্ছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

গাইবান্ধা-৩ : এ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ মোট চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তারা হলেন : আওয়ামী লীগের উম্মে কুলসুম স্মৃতি, বিএনপির অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মাইনুল হাসান সাদিক, জাতীয় পার্টির মাইনুর রাব্বী চৌধুরী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি।

সংসদ সদস্য ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনটিতে ভোটার ৪ লাখ ৩৫ হাজার ২১১ জন, ভোটকেন্দ্র ১৩২টি ও ভোটকক্ষ ৭৮৬টি।

সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১০ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের ১৪টি টিম ও পুলিশের ৪০টি টিম টহলে রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখভালে ২ জন জুডিশিয়াল ও ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমেছেন।

ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে এ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল পাঠানো হয়েছে। পরিবেশ ভালো রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here