সৌরজগতের বাইরের একটি নক্ষত্রের গ্রহে পানির সন্ধান পেয়েছেন মহাকাশচারীরা। কে২-১৮বি নামে ওই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে পানির অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়ায় পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজার মতো নতুন একটি গ্রহ পেলেন বিজ্ঞানীরা। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জীবনধারণের উপযোগী গ্যাসগুলো রয়েছে কি না, তা আগামী ১০ বছরের মধ্যে স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল নেচার অ্যাস্ট্রোনমিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে। কোনো নক্ষত্রের কক্ষপথে থাকা গ্রহগুলো নক্ষত্র থেকে যে দূরত্বে থাকলে সেখানকার তাপমাত্রা জীবনধারণের উপযোগী বলে মনে করা হয়, তেমন বসবাসযোগ্য সীমানাকে বলা হয় ‘হ্যাবিটেবল জোন’ বা ‘বসবাসযোগ্য অঞ্চল’। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) বিজ্ঞানী অধ্যাপক জিওভান্না টিনেট্টি এই আবিষ্কারকে ‘অভূতপূর্ব’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘কোনো নক্ষত্রের বসবাসযোগ্য অঞ্চলের মধ্যে থাকা কোনো গ্রহে এই প্রথম পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।’ ইউসিএলের আরেক অধ্যাপক ড. ইনগো ওয়াল্ডম্যানের ভাষ্যমতে, পৃথিবী থেকে কে২-১৮বি গ্রহটির দূরত্ব ১১১ আলোকবর্ষ বা ৬৫ হাজার লাখ মাইল। এত দূরের কোনো গ্রহে যোগাযোগ করার মতো প্রযুক্তি এ মুহূর্তে বিজ্ঞানীদের জানা নেই। তাই এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের একমাত্র ভরসা পরবর্তী প্রজন্মের টেলিস্কোপ, যেটি ২০২০-এর দশকে পাওয়া যাবে। ওই টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে কে২-১৮বি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে প্রাণী থেকে উৎপন্ন কোনো গ্যাসের অস্তিত্ব রয়েছে কি না। ড. ওয়াল্ডম্যান বলেন, ‘এটি বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় প্রশ্নগুলোর একটি। আমরা সব সময়ই জানতে চেয়েছি, এই মহাবিশ্বে পৃথিবী ছাড়া আর কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কি না।’ ‘আগামী ১০ বছরের মধ্যেই আমরা জানতে পারব, ওই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে প্রাণী থেকে সৃষ্ট রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে কি না,’ যোগ করেন ড. ওয়াল্ডম্যান।