কক্ষে বসিয়া আমি শুনিলাম ময়না পাখি মােরে কয় !
আমাদিগকে কষ্ট দিয়া মনুষ্য কেমনে রয় ?

আমাদেরকে উড়িতে দেখিয়া মনুষ্য দেয় হাসি ,

মিছে মিছি বলে তারা “পাখি!
এ তাে আমি অনেক ভালােবাসি।
যদি তাহা সত্য হইতাে
তবে নিজ বাড়ির স্বাদে,
গাছ নিধােনাে ধারণা নিত
এথায় পাখিও বাসা বাধে।
হঠাৎ করিয়া টিয়া পাখি ময়নারে কহিল থামো!

আমারে কয়, তাহার বক্তিতা বহুত শুনিলা।
এবার আমার কথা শােনো।
আমি জানি , ময়না তােমারে যাহা বলিল,

তােমার কাছে বক্তিতা বৈ কিছু নয়,
দুঃখ মােরা বােঝাই কাহারে
মানুষ মাত্র স্বার্থ পরই হয়।
বিঘার পর বিঘা জমি তােমার
মন চায় তাে বাড়ী করই না ,
কিন্তু তাহার পাশে গাছ লাগাইবার
আদি ছটাক জায়গা কেন রাখনা ?
তাৎক্ষনাত কবুতর আসিয়া কয়,
টিয়া তাের অনেক হল এবার তুই বয়।
শােন হে মানব
তােমরা লােভে পড়িয়া বুনিছাে টাকার জাল ,

মােদের অভিশাপ লইয়া তােমরা
বাঁচিবে আর কত কাল।
মানব যেহেতু , মনও আছে,
আমাদের কথা একটু ভাবনা
বাসস্থান ছেড়ে কোথায় যাব ?
পাষাণতা পরিহার করাে না।
এই মাঝখানে ক্রুদ্ধ হইয়া বাবুই আসিয়া কহে ,

কাকে কী বলছাে ? অনুনয় করছাে ?
মানুষ বাঁচে শুধু মােহে।
পাখিদের তােমরা তুচ্ছ ভাব
এ তােমাদের শুধু কল্পনা,
গাছ আমাদের , আমরা গাছের
এথা হতে আমরা কোথায়ও যাব না।
প্রয়ােজনে মােরা বিদ্রোহ করিব
ভয় পাইনে আপনাদের।
পূর্বে বহুত ভালাে মানুষ ছিল,
তাই সম্মান করি মানব জাতের।
এমনই সময় জানালার পাশে শালিক আসিয়া বসে।
বলিয়া উঠিলাম ,

“ সকলেই চুপ ! না হয় ডুবাবাে খেজুরে রসে ”।
জানি তুমি শালিক কেন এসেছাে
কী বা তােমরা জ্বালা,
কাউকে কিছু বলিতে হবে না
এবার আমার বলার পালা।
লজ্জা লাগে, অনুতপ্ত হই
কথা শুনি ভিজিয়া গেল আঁখি,
মানুষ হইয়া ভূ – দর্শন করিলাম
পরের জন্মে জন্মাইবাে হইয়া পাখি।