গাজা উপত্যকায় প্রস্তাবিত অস্ত্রবিরতি চুক্তির কাঠামো অনুমোদন করেছে ইসরাইল। তবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এখনো তাদের অবস্থান প্রকাশ করেনি। মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা শনিবার এ তথ্য জানান।
আন্তর্জাতিক মধ্যস্ততাকারীরা পবিত্র রমজান মাসে গাজায় হামলা বন্ধ করার ব্যাপারে একটি সমঝোতায় উপনীত হওয়ার চেষ্টা করছেন। ১০ মার্চ রোজা শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরাইলিরা প্রস্তাবটি ‘কমবেশি গ্রহণ’ করে নিয়েছে। এতে ছয় সপ্তাহের অস্ত্রবিরতির পাশাপাশি হামাসের হাতে থাকা নারী, বৃদ্ধ, আহত ও অসুস্থদের মুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বল এখন হামাসের কোর্টে। আমরা যতটা সম্ভব কঠোরভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছি।’
ওই কর্মকর্তা নিজের পরিচয় প্রকাশ করেননি।
তিনি বলেন, ‘বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। চুক্তিটির মূল কথা সেখানেই নিহিত রয়েছে।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়ে প্রায় ২৪০ জনকে বন্দী করে হামাস। এরপর থেকে গাজায় বিরামহীনভাবে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
ইসরাইলি ও হামাস প্রতিনিধিদল আজ রোববার কায়রোতে উপস্থিত হবে বলে আশঅ করা যায়। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাসের হাতে বন্দীদের মধ্যে যারা জীবিত আছে, তাদের পূর্ণ তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত ইসরাইল তাদের প্রতিনিধিদল পাঠাবে না।
যুদ্ধবিরতির জন্য কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোজার আগেই যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তবে হামাস তাদের অবস্থান থেকে সরে যায়নি। তারা সাময়িক অস্ত্রবিরতি নয়, বরং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দিচ্ছে। কিন্তু ইসরাইল এমন শর্তে রাজি হচ্ছে না।
তবে মিসরীয়রা হামাসকে আশ্বাস দিচ্ছে যে অস্ত্রবিরতির দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। মিসরের এই অবস্থানের ব্যাপারে হামাস কোনো মন্তব্য করেনি।
ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান রয়ে গেছে।
ইসরাইলকে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি করাতে মিসরীয়রা ইসরাইল এবং গাজার মধ্যে একটি নিরাপত্তা বাফার জোন প্রতিষ্ঠা এবং সেখানে মিসর ও ইসরাইলি যৌথবাহিনীর টহলের প্রস্তাব দিয়েছে।
ইসরাইল ও হামাস ইতোপূর্বে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করেছিল। ওই সময় হামাস ১০৫ বন্দীকে মুক্তি দিয়েছিল। বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। এবার আরো বেশি ফিলিস্তিনির মুক্তি দাবি করছে হামাস। তাছাড়া আরো বেশি ত্রাণ সহায়তাও চাচ্ছে তারা।
সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল