২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ অভিযানে আজ বিকালে ভারতে উড়াল দেবে বাংলাদেশ দল। অথচ ২০ ঘণ্টারও কম সময় আগে দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শ্রীলংকা একইদিনে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করলেও বাংলাদেশের নাটকীয়তা সবকিছুকে হার মানিয়েছে। বহু আলোচিত তামিম ইকবালকে ছাড়াই শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অবিশ্বাস্য নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে। তামিম দলে না থাকায় টিম ম্যানেজার নাফিস ইকবালও কাল ম্যাচের মধ্যেই দল ছেড়ে চলে যান। তামিমের জায়গায় বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছেন তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দল ঘোষণা করেনি বিসিবি। ফেসবুক পেজে দল ঘোষণার পর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন এবং অন্য দুই নির্বাচক হাবিবুল বাশার ও আব্দুর রাজ্জাক।

যে মাহমুদউল্লাহকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল শেষ পর্যন্ত তাকেই দলে রাখা হলো। ইবাদত হোসেনের ইনজুরির কারণে ভাগ্য খুলে গেল ডান হাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। তামিমকে না রাখা নিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘তামিমের ইনজুরি কনসার্ন ছিল। এ অবস্থায় চিকিৎসক এবং আমরা সবাই মিলে আলোচনা করে তাকে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তামিমের ব্যাপারে কোচ ও অধিনায়কের মতামত কী ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে মিনহাজুল জানালেন, ‘ভেতরে যে কথা হয়েছে সেটা সবার সামনে বলা যাবে না। তবে সবার সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের আগে একটি নির্দিষ্ট পথে এগোচ্ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটিংয়ে ফেরার পর তামিম সংবাদ মাধ্যমকে জানান, অস্বস্তিবোধ করছেন ও পিঠে কিছুটা ব্যথা অনুভব করেছেন। এরপর টিম ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছেন, বিশ্বকাপে সব ম্যাচে খেলতে পারবেন না তিনি। এছাড়া তৃতীয় ওয়ানডে থেকেও তিনি বিশ্রাম নেন। সেখানেই বাদ সেধেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তারা কোনোভাবেই দলে আনফিট খেলোয়াড় নিয়ে পরিকল্পনা সাজাতে চান না। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের বাসায় সোমবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া বৈঠকে নিজেদের মতামত জানান কোচ ও অধিনায়ক। মঙ্গলবারও একই অবস্থানে অনড় থাকেন তারা। প্রকট সংকটে মধ্যস্থতা করার জন্য সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজাকে ডাকা হয়। তিনিও কোনো উপায় বাতলে দিতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তামিমকে ছাড়াই বিশ্বকাপে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তামিম না থাকলেও ভাগ্য খুলে গেছে মাহমুদউল্লাহর। গত বিশ্বকাপেই তাকে বাদ দিতে চেয়েছিলেন সাকিব। তারই নেতৃত্বে এবার খেলবেন মাহমুদউল্লাহ। ধারণা করা হয়েছিল অর্ধেক ফিট তামিমের মতোও কার্যকর কোনো ওপেনার নেই বাংলাদেশের। কিন্তু সেখানে ধারাবাহিক ভাবে ব্যর্থ জুনিয়র তামিমের ওপর আস্থা রাখা হলো। দল ঘোষণার দিন দুপুরে স্টেডিয়ামে ডেকে আনা মোহাম্মদ নাঈম শেখকে শেষ পর্যন্ত দলে রাখা হয়নি। ব্যাক আপ ওপেনার হিসাব নেই কেউই। সুযোগ পেয়ে গেছেন মেহেদী হাসানও। ইবাদত হোসেনের ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপে দলে পঞ্চম বোলার হিসাবে থাকছেন তানজিদ হাসান সাকিব।