অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে আবার গম ও চাল আমদানি শুরু করেছে সরকার। আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই লাখ টন গম ও তিন লাখ টন চাল। প্রথম প্যাকেজে আসছে গম। প্রায় ৪৭ হাজার টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। এসব গমের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের এগ্রোকর্পস। সরকার বেশির ভাগ সময় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করলেও এবার গম আমদানি করেছে বুলগেরিয়া থেকে। চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। দ্বিতীয় ধাপে চালের চালান আসবে।
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর ‘এমভি ভি. নোবেল’ নামে একটি জাহাজ ৪৬ হাজার ৫০১ দশমিক ৭০০ মেট্রিক টন গম নিয়ে বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছে। সোমবার সকালে অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাহাজ থেকে আমদানি করা গমের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। নমুনাসংক্রান্ত প্রতিবেদন ‘খাওয়ার উপযোগী’ পাওয়া গেলে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই খালাস শুরু হবে। খালাস প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে কাস্টমসের কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমদানি করা গমের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হবে ২৭ হাজার ৯০১ মেট্রিক টন আর মোংলা বন্দরে খালাস হবে ১৮ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন গম।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জি টু জি ও আন্তর্জাতিক টেন্ডারের আওতায় বিপুল পরিমাণ গম আমদানি করলেও তা এখন খোলাবাজারে আসার সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমে এলেও এর প্রভাব পড়েনি দেশের বাজারে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরপরই বাজারের অধিকাংশ গম আমদানি হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে। দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বর্তমানে ভালো মানের গম বিক্রি হচ্ছে মনপ্রতি এক হাজার ৮০০ থেকে এক হাজার ৯০০ টাকায়। অন্যদিকে মাঝারি মানের গমের দাম মনপ্রতি এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকার মতো। এতে করে দেশের পাইকারি বাজারেই গমের দাম পড়ছে কেজিপ্রতি ৫১ টাকা।
খাতুনগঞ্জের গমের আড়তদার মহিউদ্দিন জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গমের দাম বাড়তে শুরু করে। দেশ দুটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গম রপ্তানিকারক। ইউক্রেন-রাশিয়ার বিকল্প হিসাবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের গমের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা বেড়েছে। ভারত ছাড়া আমাদের দেশে গম আসে অস্ট্রেলিয়া কানাডা এবং আর্জেন্টিনা থেকে। তবে সেসব দেশের গমের আমদানি খরচও অনেক বেশি। অন্যদিকে ভারতের গম কম আমিষযুক্ত।
অস্ট্রেলিয়া-কানাডা ও আর্জেন্টিনার গম অধিক আমিষযুক্ত। ময়দা তৈরিতে এসব গম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
চট্টগ্রাম চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের উপ-নিয়ন্ত্রক সুনীল দত্ত বলেন, নতুন করে গম আমদানি আবার শুরু হয়েছে। এটি প্রথম প্যাকেজ। জাহাজটি থেকে স্যাম্পল (নমুনা) সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর গম খালাস শুরু হবে।