আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত দেশবিদেশে আমাদের বিরুদ্ধেই অপপ্রচার ও নানারকম গুজব ছড়াচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সুযোগ নিয়ে তারা (বিএনপি-জামায়াত) এগিয়ে গেলে তো মানা যায় না। কাজেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুরুত্ব বুঝতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আরও জোরালো ভূমিকা পালনের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, জনগণের সামনে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্য দিয়ে লড়াই করতে হবে। তাহলে দেশের মানুষ আর বিভ্রান্ত হবে না। বুধবার বিশেষ বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের সরকারের উন্নয়ন প্রচারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা এত উন্নয়ন করছি, সেগুলো প্রচারে অনেকটা পিছিয়ে আছে। বিএনপি-জামায়াতের কাজ নেই। তারা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে দেশে-বিদেশে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়াচ্ছে। এতে ফেসবুক, ইউটিউব ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা হচ্ছে। বেশির ভাগ গুজবই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ও উসকানিমূলক। সেগুলোর উদ্দেশ্য-সরকারকে বিব্রত করা, দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সত্য তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি। দলীয় নেতাকর্মীদের তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।
বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, দলীয় সভাপতির বক্তব্য হলো-আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। সারা পৃথিবীর পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। আমি বিশ্বাস করি, এ নির্বাচনে সবাই আসবে। আরেক নেতা বলেন, দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্ত চলছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। এখন যুদ্ধ শুধু রাজপথে নয়-সাইবার যুদ্ধও হয়। সুতরাং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের আরও সক্রিয় হতে হবে। যদিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের অনেকেই কাজ করছেন। কিন্তু প্রত্যেকের উচিত আরও সক্রিয় হওয়া। আমরা যদি আমাদের সব নেতাকর্মীকে সক্রিয় করতে পারি, তাহলে দুই মাসের মধ্যে আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাধান্য বিস্তার করতে পারব।
সূত্র জানায়, বৈঠকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সহযোগী সংগঠনের মধ্যে কৃষক লীগের সমীর চন্দ, উম্মে কুলসুম স্মৃতি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু, আফজালুর রহমান বাবু, যুবলীগের মাইনুল হোসেন খান নিখিল, জয়দেব নন্দী, মোস্তাফিজুর রহমান, মহিলা আওয়ামী লীগের মেহের আফরোজ চুমকি, শবনম পারভীন শিলা, যুব মহিলা লীগের আলেয়া ডেইজী সরোয়ার, শারমিন সুলতানা লিলি, ছাত্রলীগের সাদ্দাম হোসেন, শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে উপস্থিত সহযোগী সংগঠনের এক নেতা বলেন, নেত্রী তো আমাদের মাঝেমধ্যেই ডাকেন। আমাদের সংগঠনের যেগুলোর কমিটি হয়নি, সেগুলোর কমিটি করার নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্বাচন সামনে রেখে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। বিরোধীদের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের জবাব এবং সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।