চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীকে মহাবিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। শনিবার রাতভর ভারি বর্ষণের কারণে রোববার নগরীর অধিকাংশ এলাকা ছিল জলমগ্ন। সড়ক, অলিগলি ও বাসাবাড়ির সামনে পানি জমে যাওয়ায় পরীক্ষার্থীরা সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেনি। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় চট্টগ্রাম বোর্ডের আওতাধীন নগরী ও জেলার ২৯টি কেন্দ্রে এক ঘণ্টা দেরিতে পরীক্ষা শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রথম দিনের পরীক্ষায় জলাবদ্ধতাসহ নানা কারণে ৪৪৫ জন অনুপস্থিত ছিল বলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানিয়েছে।
এবার করোনা-পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা হচ্ছে। রুটিন অনুযায়ী সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও বেলা ১১টায় অর্থাৎ এক ঘণ্টা পিছিয়ে নগরীর ২৭টি এবং জেলার দুটি কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হয়। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্রনাথ এক ঘণ্টা দেরিতে পরীক্ষা শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ১৭ আগস্ট থেকে সারা দেশে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন পরীক্ষা শুরুর তারিখ ১০ দিন পিছিয়ে ২৭ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়। একইভাবে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সমমানের পরীক্ষার তারিখও পেছানো হয়েছিল।
শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় এবার ১ লাখ ২ হাজার ৪৬৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। ১১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে মহানগরীর ২৭টি কেন্দ্রে, হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ ও কুয়াইশ কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এক ঘণ্টা দেরিতে পরীক্ষা শুরু হয়।
বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়া, ঠিকমতো যানবাহন না পাওয়ায় পরীক্ষার্থীদের ভয়াবহ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কেন্দ্রে পৌঁছাতে তাদের দেরি হয়েছে। যে কারণে তাৎক্ষণিকভাবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন মহিলা কলেজ কেন্দ্রের নিচতলায় পানি ঢুকেছিল। পরীক্ষার্থীরা সেখানে কোমরসমান পানি ভেঙে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। পরীক্ষা শেষে তারা সারি সারি টুল বসিয়ে এর ওপর দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে এসেছে। এ সময় অনেকে পানিতে পড়ে গেছে। অনেকের প্রবেশপত্রও পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে।
সঠিক সময়ে বাসা থেকে বের হলেও কোনো কোনো পরীক্ষার্থী দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় কোনো যানবাহন, রিকশা, এমনকি টেক্সি পর্যন্ত পায়নি। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটেই কেন্দ্রে গেছে।
নগরীর যে ২৭টি পরীক্ষাকেন্দ্রের পরীক্ষা দেরিতে শুরু হয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগই নগরীর নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত। নাছির উদ্দিন নামে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের এক নেতা জানান, বাকলিয়া কলেজ, কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন কলেজ, হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজ, সিডিএ পাবলিক কলেজসহ নগরীর নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে পরীক্ষার্থীরা। সকাল ১০টায় পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হলেও বেশির ভাগ কেন্দ্রে ১৫-২০ মিনিট, এমনকি পৌনে এক ঘণ্টা পরও পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে পৌঁছে।