বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক রাতেই শেষ আ.লীগ

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মিষ্টিমিষ্টি কথা বলে। তাদের বাইরে মধু, অন্তরে বিষ। এখন বলে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের লোকজনের কোনো ক্ষতি হবে না। কী সুন্দর কথা! আমাদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে, বাকিটাও একরাতেই শেষ করবে। এটা তাদের ভেতরের কথা। বিএনপির তিন গুণ-সন্ত্রাস, দুর্নীতি আর মানুষ খুন। এই দল পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। এখন তারা বলে, আওয়ামী লীগাররা সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী! এর চেয়ে বড় মিথ্যা বাংলায় নেই। তারা যে অপরাধে অপরাধী, আওয়ামী লীগের ওপর সেই অপরাধ আরোপ করতে চায়। এটা তাদের নতুন কূটকৌশল। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা হারলে বাংলাদেশ হেরে যাবে।

শনিবার বিকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মিরপুর দারুসসালাম বালুর মাঠে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি আরও বলেন, কানাডার আদালতই বলেছে বিএনপি সন্ত্রাসী দল। তাদের হাতে মানুষ খুনের রক্তের দাগ। প্রত্যেক নেতা মিষ্টিমিষ্টি কথা বলে, কত মানুষের রক্ত দিয়ে নিজেদের হাত রাঙিয়েছে। মনে আছে বিএনপির নির্যাতন? পঁচাত্তর দেখেছেন, অবলা নারী, অবুঝ শিশুও জিয়ার ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পায়নি। ৩ নভেম্বর জেলের অভ্যন্তরে বঙ্গবন্ধুর চার সহযোগীকে হত্যা করেছে মোশতাক আর জিয়া। আমাদের পার্টির ২২ হাজার নেতাকর্মীকে বিএনপি হত্যা করেছে। তারা এখন অপবাদ দেয় আমাদের বিরুদ্ধে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তারা প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় গালি দিচ্ছে, তারপরও এই নেতারা আবার ঠিকই বাসায় গিয়ে এসি রুমে ঘুমাচ্ছে, হিন্দি সিনেমা দেখছে। বড় আরামে আছে। শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (বিএনপিকে) আন্দোলন, মিছিল, বিক্ষোভ করতে দাও। তোমরা (আওয়ামী লীগ) শান্তি সমাবেশ কর। তোমরা তাদের (বিএনপির) ওপর কোনো প্রকার হামলা করবে না। পুলিশকে বলে দিয়েছেন-প্রয়োজন নেই, করুক আন্দোলন, বিক্ষোভ। কাউকে গ্রেফতার করবে না। কই অ্যারেস্ট কে হয়েছে? সব নেতাই তো বাইরে। কিন্তু বিএনপি আমলে আমরা ঘরেই থাকতে পারিনি। বিএনপির আমলে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার পিতা হত্যার বিচারই চাইতে পারেননি।

বিএনপি নেতাদের কোনো ইমান নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমান উল্লাহ আমান ফলের রস খেয়ে সব ভুলে গেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এসেছেন। গয়েশ্বর কিশোরগঞ্জের কোরাল মাছ খেয়ে খুশি হয়েছেন। কিছু প্যাকেট বাড়ির জন্যও নিয়ে গেছেন। এগুলো ওপেন, ছবি আছে। এদের কোনো চরিত্র আছে? গায়ে বাড়িও পড়েনি, আঘাতও পড়েনি। তার আগেই ফরফর করে, ফলের রসও ভালো, কোরাল মাছও ভালো।

সরকারের নানা উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের কাছে আমি জানতে চাই-শেখ হাসিনার বিকল্প প্রধানমন্ত্রী কে আছেন? তার মতো জনদরদি নেতা কে আছেন? আমি সব দলের কাছে জানতে চাই-শেখ হাসিনা ছাড়া যোগ্য নেতা কে আছে? বিএনপি কাকে নেতা বানাবে? তিনি বলেন, জনগণ কি চায় শেখ হাসিনা পদত্যাগ করুক? আদালতের আদেশে কেয়ারটেকার সরকার কবরে ঘুমিয়ে আছে। সেটা কি আর এ দেশের জনগণ চায়? তারা (বিএনপি) কেন চায়?

সেতুমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দেখলে মনে হবে বিদেশে আছি। শেখ হাসিনা জনগণের প্রতি যে প্রতিজ্ঞা করেন, তা রক্ষা করেন। সামনে বিএনপি চোখে অন্ধকার দেখবে। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্রকে গিলে খাবে। বাংলাদেশকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান বানাবে, এটা তাদের ধান্দা। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা হারলে বাংলাদেশ হেরে যাবে, গরিব মানুষ হেরে যাবে, স্বাধীনতা হেরে যাবে। তাই তাকে বিজয়ী করতে হবে। শেখ হাসিনা হেরে গেলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হেরে যাবে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা খালি হাতে লড়ব। তবে আগুন হাতে এলে আমরা তা শক্ত হাতে প্রতিহত করব।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, সংসদ-সদস্য আগা খান মিন্টুসহ মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতারা। পরে দুস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।