টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি পানির ঢলে লোহাগাড়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এলাকার নদী, খাল ও ছড়ায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে খাল পাড়ের মানুষ আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। ডুবে গেছে মাছের খামার। বহু বসতঘর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। টানা বর্ষণে ঘরবন্দি হয়ে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।

জানা যায়, ভারী বর্ষণে উপজেলার ডলু, টংকাবতী, হাঙ্গর, হাতিয়া, কুলপাগলি, বোয়ালিয়া খালসহ বিভিন্ন ছড়ার পানি বিপদ সীমান উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক স্থানে খালের পানি গড়িয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের ক্ষেতখামার। পুটিবিলায় আ.স.ম দিদারুল আলম ১টি, ফারুক মিয়ার ৩টি ও জানে আলমের ১টি মাছের খামার ডুবে গেছে। চুনতিতে ভারী বর্ষণে একাধিক রাস্তাঘাট ও ছড়ার পাড় ভেঙে গেছে। এছাড়া আধুনগর ইউনিয়নে জুড়ি খালের উপর নির্মিত ১৫ মিটার দীর্ঘ সেতু উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

আধুনগর ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন জানান, টানা বৃষ্টিতে ডলুখাল ও হাতিয়ার খালের পানি বেড়ে ইউনিয়নের সিপাহি পাড়া, মিয়া পাড়া, সর্দানী পাড়া, চৌধুরী পাড়া, মরা ডলুকুল, ক্যামেলিয়া পাড়া, পাল পাড়া ও উজা পাড়াসহ প্রায় ১০টি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া সিপাহি পাড়ায় শাহ মজিদিয়া-রশিদিয়া সড়কে ডলুখালের ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকার অসংখ্য চলাচলের রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে। হাতিয়া খালের পানি পাড়ের উপর উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি।

কলাউজান ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ জানান, ভারী বর্ষণে ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। টংকাবতী খালের ভাঙনে বহু বসতঘর বিলীন হওয়ার মুখে। এছাড়াও রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালভার্টের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

খাল পাড়ের বাসিন্দারা জানান, অপরিকল্পতভাবে বালু উত্তোলন করায় নদী ও খালের গভীরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানির তীব্র স্রোতে নদী ও খালের পাড় ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত এবং জনবসতি ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। এছাড়াও উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

লোহাগাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহবুব আলম শাওন বলেন, “নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পেয়েছি। আজ সোমবার সকালে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে। পানিবন্দি দুর্গত মানুষের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।