সুইডেন ও ডেনমার্কে পবিত্র কুরআনের নতুন করে অবমাননা তদন্তের জন্য সম্প্রতি ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ১৮তম গুরুত্বপূর্ণ ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সুইডেনে আশ্রয়গ্রহণকারী ইরাকি শরণার্থী সেলভান মোমিকা থেকে পবিত্র কুরআনের অবমাননা শুরু হয়। গত ২৮ জুন, সুইডিশ পুলিশের সহায়তায়, মোমিকা রাজধানী স্টকহোমে ইরাকি দূতাবাসের সামনে পবিত্র কুরআনের একটি কপি পুড়িয়ে দেয়। এই ন্যক্কারজনক কাজের বিরুদ্ধে ইরাকের মুসলিম জনগণের তীব্র প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনার পরও ওই ব্যক্তি ঠিক এক সপ্তাহ পর ওই একই কাজের পুনরাবৃত্তি করে।
ডেনমার্কে একটি ইসলাম বিদ্বেষী গ্রুপের সদস্যরা ইসলাম ও ইরাকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে ইরাকের পতাকা ও পবিত্র কুরআনের অবমাননা করেছে এবং মুসলিম দেশগুলোর জনগণের ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও এই জঘন্য কাজের পুনরাবৃত্তি করেছে। কুরআন অবমাননার ঘটনার এক মাস পর ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই জরুরি বৈঠকে বসেন। কুরআন অবমাননার ঘটনায় ওআইসির নিষ্ক্রিয় ভূমিকার বিষয়ে দুই ধরনের সমালোচনা হয়েছে। প্রথমত, ওআইসি অনেক দেরিতে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এবং দ্বিতীয়ত, গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠক সশরীরে অনুষ্ঠিত হয়নি। কেননা সশরীরে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়তো অনেক।
তবে, দেরিতে হলেও ওআইসির ভার্চুয়াল বৈঠক থেকে ইউরোপের কয়েকটি দেশে কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয়টি ফুটে উঠেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। তাদের মতে, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকটি কুরআন অবমাননা রোধে সুইডিশ ও ডেনিশ সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় মুসলিম বিশ্বে হতাশার পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এটি ইসলামের পবিত্রতা রক্ষার জন্য একটি ভাল সূচনা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে ওআইসি’র মহাসচিব হোসেইন ইব্রাহিম ত্বহা এই সংস্থার সদস্য দেশগুলোকে সুইডেন ও ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে নিজস্ব বিবেচনার ভিত্তিতে সার্বভৌম পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যদিকে, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহানও কুরআন অবমাননার পুনরাবৃত্তি রোধে ঐক্যবদ্ধভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সব মুসলিম দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ওআইসি দেরিতে বৈঠকের আয়োজন করলেও তাদের অবস্থান থেকে বোঝা যায় যে, পবিত্র কুরআন অবমাননা ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলোর সাথে সুইডেন ও ডেনমার্কের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ওআইসির বৈঠকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরেছেন। তিনি কুরআনের অবমাননাকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান এবং ওআইসি’র একটি প্রতিনিধি দলকে সুইডেন ও ডেনমার্কে পাঠানোর প্রস্তাব দেন যাতে কোরআন অবমাননা রোধে ওই দেশ দুটির সরকারের সাথে কথা বলা যায় এবং ইসলাম ধর্মের শান্তিকামী চেহারাকেও তাদের সামনে তুলে ধরা যায়।
সূত্র: পার্স টুডে