ভুয়া বিল তৈরি করে অর্থ লোপাটের অভিযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দাখিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী।

বৃহস্পতিবার (০৭ জানুয়ারি) সকালে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে অ্যাডভোকেট শিশির মুহাম্মদ মনিরসহ সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী এ অভিযোগ দাখিল করেন।

অ্যাডভোকেট শিশির মুহাম্মদ মনির বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণের নামে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ও নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা ব্যতীত ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচসহ সরকারি অর্থের ক্ষতি করা হয়েছে।

ইসির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ: রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদনে দু’ধরনের ৯টি অভিযোগ করা হয়েছে। একটি হচ্ছে আর্থিক অনিয়ম ও দ্বিতীয়টি হচ্ছে নির্বাচনী অনিয়ম।

দুর্নীতি ও অর্থ সংশ্লিষ্ট তিনটি অভিযোগ হচ্ছে:

১. ‘বিশেষ বক্তা’ হিসেবে বক্তৃতা দেয়ার নামে ২ কোটি টাকা নেয়ার মতো আর্থিক অসদাচরণ ও অনিয়ম,

২. নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৪ কোটি ৮ লাখ টাকার অসদাচরণ ও অনিয়ম এবং

৩. নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনজন কমিশনারের তিনটি গাড়ি ব্যবহারজনিত আর্থিক অসদাচরণ ও অনিয়ম।

নির্বাচন সংক্রান্ত ৬ অভিযোগ:

১. ইভিএম কেনা ও ব্যবহারে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম,

২. একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম,

৩. ঢাকা (উত্তর ও দক্ষিণ) সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম,

৪. খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম,

৫. গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম এবং

৬. সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম।

প্রসঙ্গত, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণ, আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আনেন ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা এ ব্যাপারে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে ১৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে লিখিত দাবি জানান। এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলার জন্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে অনুরোধও জানিয়েছেন তারা।

এরপর ওই বিশিষ্টজনরা ১৯ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়টি প্রকাশ করেন। সেখানে বলা হয়, বর্তমান ইসি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিভিন্নভাবে গুরুতর অসদাচরণে লিপ্ত। তারা গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যা অভিশংসনযোগ্য অপরাধ।