আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের (চসিক)আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের অভিযোগ দলের অনেক নেতা বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করছেন।
নগরীর সব ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত একক প্রার্থী থাকলেও বিপরীতে আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের পাশে দলীয় নেতারা কাজ না করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় ক্ষুব্ধ তাঁরা।
৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর ও দলের ওয়ার্ড কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুদ্দিন খালেদ। তিনি দল থেকে সমর্থন পেলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাদের অনেকেই তাঁর বিপক্ষে। দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কাজ করছেন বলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এই প্রার্থীর অভিযোগ।
২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নগর যুবলীগের সদস্য মোহাম্মদ ইব্রাহিম। তাঁর অভিযোগ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ দল ও সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর মো. সাহেদ ইকবাল বাবুর পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করছেন।
সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২২, ৩০ ও ৩১ নম্বরে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া মহানগর আওয়ামী মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নীলু নাগেরও অভিযোগ, নির্বাচনী মাঠে দলীয় নেতাদের কাছে পাচ্ছেন না। এসব নেতা দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর বদলে বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় চসিক নির্বাচনে শুধু সাধারণ ও সংরক্ষিত এসব ওয়ার্ডই নয়, বেশির ভাগ ওয়ার্ডে এমন পরিস্থিতি চলছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড থেকে চসিক নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য দল থেকে মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার পাশাপাশি নগরের ৪১টি সাধারণ ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে দল থেকে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়া হয়। দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে নগর, থানা ও ওয়ার্ড নেতারা নির্বাচনী মাঠে কাজ করলেও দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের অভিযোগ, অনেক নেতা তাঁদের পক্ষে না নামলেও বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্য কাজ করছেন। এর ফলে দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা বেকাদায় পড়েছেন।
আওয়ামীলীগ কর্মী সূত্রে জানা গেছে, কাউন্সিলর পদে দল সমর্থিত প্রার্থীর বাইরে বিদ্রোহী ৯২ জন রয়েছেন। এর মধ্যে ৪০টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৭টিতে ৬৪ জন এবং সংরক্ষিত ১৪টি ওয়ার্ডে ২৮ জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জালালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব বলেন, ‘আমরা মূলত নৌকার (মেয়র পদপ্রার্থী) প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছি। কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নগর কমিটি থেকে লিখিত কোনো নির্দেশনা পাইনি।’
৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজ করলেও সাধারণ সম্পাদক নীরব রয়েছেন। অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।
২২, ৩০ ও ৩১ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নীলু নাগ বলেন, ‘নগরে ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মধ্যে ছয়টিতে সাবেক কাউন্সিলর এবং আটটিতে নতুন মুখ রয়েছে। কিন্তু আমরা সবাই একই সমস্যায়। আমরা দলের মনোনয়ন বোর্ড থেকে সমর্থন পেলেও স্থানীয় নেতাদের অনেকেই দল সমর্থিত প্রার্থীর জন্য কাজ করছেন না।’