গত ৩০ অক্টোবর মিরপুরের রূপনগরে বেলুনে গ্যাস ভরার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সাত শিশু নিহত এবং ১৫ জন আহত হলে এ সংস্থাটি নেড়ে চড়ে বসে এবং সেই সাতে হাইড্রোজেন ভর্তি বেলুন ব্যবহারের জন্য সিলিন্ডারের ভেতরেই হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে । এ প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সংস্থাটি একটি প্রতিবেদন তৈরি করে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার কথাও রয়েছে। সূত্র জানায়, তদন্ত প্রতিবেদনে বেশ কিছূ সুপারিশ রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে মা-বাবা ও সন্তানদের হাইড্রোজেন ভরা বেলুন কেনায় নিরুৎসাহিত করা এবং কোথাও এই ধরনের সিলিন্ডার কেউ ব্যবহার করলে স্থানীয় থানায় খবর দেয়া।
জানা যায়, মিরপুরের ঘটনায় যে সিলিন্ডারটির বিস্ফোরিত হয়েছিল সেটি এলপিজি সিলিন্ডার ছিল। এ ধরনের সিলিন্ডারে যে এলপিজি ভরা হয়, সেটি কম চাপযুক্ত গ্যাস। কিন্তু হাইড্রোজেন একটি অতি উচ্চচাপ যুক্ত গ্যাস। ফলে এলপিজি সিলিন্ডারের মধ্যে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদনের চেষ্টা করলে সেটি ফেটে যাবে। অন্যদিকে, যদি সিলিন্ডারে হাইড্রোজেন উৎপাদন না করে শুধু এলপিজির মতো রিফিল করা হয়, তাহলে সেটি ফেটে যাওয়ার ভয় থাকে না। মিরপুরের এলপিজি সিলিন্ডারটি রঙ ছিল লাল।
সাধারণত দুই ধরনের গ্যাস দিয়ে বেলুন ফোলানো হয়। হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন। জানা গেছে, এক ঘনমিটার হিলিয়ামের দাম সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা বিপরীতে এক ঘন মিটার হাইড্রোজেনের মূল্য ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে সিলিন্ডারে এই হাইড্রোজেন তৈরি করতে খুব বেশি হলে ৬০ থেকে ১০০টার মতো খরচ হয়। কম মূল্যে ব্যবসা করার লোভে বেলুনওয়ালারা না-জেনে, না-বুঝে এসব প্রাণঘাতী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন।
বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক সামসুল আলম জানান, আমরা সবসময় বলে আসছি, সিলিন্ডারের ভেতরে হাইড্রোজেন তৈরি করা ‍খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে দেশের প্রায় প্রত্যেক থানায় সতর্ক করে আমরা চিঠি দিচ্ছি। আগেও দিয়েছি। এখন আবার নতুন করে চিঠি দিচ্ছি।
সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত ১৪ মে অবৈধভাবে বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাস ভর্তিকরণ, বিনা লাইসেন্সে এলপিজির মজুদ, বিক্রয় ও সরবরাহ বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ওই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে সম্প্রতি এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তিরা বিভিন্ন উৎসব ও মেলায় সিলিন্ডারে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপাদন করে বেলুনে ভর্তি করে সরবরাহ এবং মেলায় ছোট ছেলে-মেয়েদের কাছে বিক্রি করছে। যা নিরাপদ নয়। এই ধরনের সিলিন্ডার থেকে বেলুনে হাইড্রোজেন গ্যাস ভর্তির সময় সিলিন্ডার ও বেলুন বিস্ফোরিত হয়ে ব্যবহারকারী এবং সাধারণ মানুষের প্রাণহানিসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here