রোহিঙ্গা ক্যাম্পে
কক্সবাজারে এই প্রথমবারের মতো এক রোহিঙ্গা শরণার্থীর শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত রোহিঙ্গা উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের লম্বাশিয়া এলাকার বাসিন্দা।

এদিকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আক্রান্তের বিষয়টিকে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা মনে করছেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ছড়ানোর কারণে ক্যাম্পের বাইরে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি অনেকগুণ বাড়বে। ফলে এটা নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া বলেন, গত ৪৪ দিনে কক্সবাজার মেডিক্যালের পিসিআর ল্যাবে মোট তিন হাজার ৩৬২ জনের স্যাম্পল টেস্ট করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জেলার ভেতরে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১৩২ জনের। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৪ মে) ১৮৬ জনের মধ্যে ১২ জনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তাদের মধ্যে একজন রোহিঙ্গা।

এদিকে রোহিঙ্গা কর্তৃপক্ষ প্রথমে দু’জন রোহিঙ্গা আক্রান্তের খবর দিলেও পরে তা একজন বলে জানানো হয়।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, আক্রান্ত রোহিঙ্গা কুতুপালং ক্যাম্প-১ এর লম্বাশিয়ার বাসিন্দা। প্রথমবারের মতো আক্রান্ত এ রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্য ছাড়াও আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের আলাদা করা হবে।

তিনি বলেন, ক্যাম্পে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউএনএইচসিআর, আইওএমসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার পরিচালিত হাসপাতালে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

‘রোহিঙ্গাদের মধ্যে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য প্রায় এক হাজার ৯০০ শয্যার টার্গেট নিয়ে আইসোলেশন সেন্টার তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০০ শয্যার কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়াও করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার পরিচালিত হাসপাতালে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) উখিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিকদার বেনারকে বলেন, এটি আমাদের জন্য অশনি সংকেত। কারণ ক্যাম্পগুলোতে যারা মানবিক সেবা দিচ্ছেন তারা সবাই বিকেলের পরে ক্যাম্পের বাইরে চলে আসেন। কোনো না কোনোভাবে আমাদের স্থানীয় লোকজনের সংস্পর্শে আসছেন।

জেলায় আক্রান্তদের মধ্যে চকরিয়া উপজেলায় ৩৮ জন, কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৩৪ জন, পেকুয়া উপজেলায় ১৮ জন, মহেশখালীতে ১২ জন, উখিয়ায় ১৪ জন, টেকনাফে নয়জন, রামু উপজেলায় চারজন ও রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন একজন।

আরো পড়ুন: কক্সবাজার সংবাদ