সাময়িক সনদপত্র
ছবি সংগৃহিত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া অনুমতি না দেয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিটের সক্ষমতা পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১১ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

এ অবস্থায় করোনা পরীক্ষার জন্য সরকারের কাছে যতদিন পর্যন্ত কিটের সক্ষমতা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে না, ততদিনের জন্য সাময়িক সনদপত্র চেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি আমাদের অপারগতার জন্য। আমাদের কাছে যে কিট আছে, আমরা দাবি করছি এটা কার্যকর। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা সরকারের অনুমোদনের দ্বার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। প্রতিদিন আপনারা আমাকে ফোন করেন, আমরা বলি কালকে, কালকে। দুর্ভাগ্য যে, বিএসএমএমইউর যারা তুলনামূলক কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখবেন, তাদের কাছে কিট পৌঁছাতে পারি নাই। আমাদের কিট আছে, তারা নিয়ে যাওয়ার মতো পত্রটা (চিঠিটা বিএসএমএমইউর উপাচার্য দেবেন) হস্তগত হয় নাই। বিএসএমএমইউ’র কমিটি প্রস্তুত আছে। তারা (কমিটি) জানিয়েছে, সেই চিঠি উপাচার্যের দফতরে আছে। উপাচার্য চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে কমিটি আমাদের জানাবে। আমরা কমিটিকে দেব।’

এক সাংবাদিক জানতে চান, রোববার রাতে আপনি আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন যে, আজ (সোমবার) থেকে বিএসএমএমইউ কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরু করবে। হলো না কেন?

জবাবে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘কালকে তারা বলেছে, চিঠি যাবে। আজকেও সেই চিঠি আসেনি। আমরা কিট নিয়ে রেডি আছি। কেন আসেনি? আমরা একটাই কারণ বলতে পারি, ভাইস চ্যান্সেলর অনুমোদন দেন নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। প্রধানমন্ত্রীর অন্তত সবাইকে নিয়ে বসা দরকার। চেষ্টা করছেন, তবে সেটা বিচ্ছিন্নভাবে চেষ্টা। তাদের মাঝে আরও কো-অর্ডিনেশন হওয়া দরকার।’

সাময়িক সনদপত্রের বিষয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে একটা আবেদন করতে চাই। যতদিন পর্যন্ত এই কিটের তুলনামূলক কার্যকারিতার রিপোর্ট না আসে, ততদিন আমাদের সাময়িক সনদপত্র দেন। যাতে আমরা রোগীদের করোনা হয়েছে কী হয়নি, এই পরীক্ষাটুকু করতে পারি। এখন যদি আমরা শুরু করি, তাহলে উনারা বলবেন, নিয়মনীতি মানে না। এটা করা যায় কিনা, সরকারের বিবেচনার জন্য আপনাদের মাধ্যমে আবেদন রাখছি।’

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কিডনি ডায়ালাইসিসে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা জানেন, দেশের সবচেয়ে বড় আমাদের কিডনি ইউনিট। আমরা প্রতিদিন ২৬০ থেকে ৩০০ জনের ডায়ালাইসিস করে থাকি। আমাদের কাছে রোগী আসে, তার করোনা পজেটিভ থাকতে পারে। তাকে আমি চিকিৎসা দিতে পারি না। নিয়মিত কাজটা করতে পারি না। কারণ, আমার অন্য রোগীরা আক্রান্ত হয়ে যাবে। তাই জনসাধারণের কাছে অনুরোধ, আমাদের এই হাসপাতালের আশেপাশে, ধানমন্ডির আশেপাশে ৫ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা দিলে আমরা সেখানে দ্রুত মেশিন বসিয়ে করোনা আক্রান্ত ১০০ জনের ডায়ালাইসিস প্রতিদিন করে দিতে পারি। এতটুকু আমরা সেবা দিতে পারি, এই সুবিধা আমাদের রয়ে গেছে।’

কিট উৎপাদনের বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এই কিট অনুমোদন পাওয়ার পরই অনেক বেশি উৎপাদন করতে হবে। ১ লাখ, ২ লাখ না, দৈনিক আমাকে অন্ততপক্ষে ১০ লাখ উৎপাদন করতে হবে। সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছি, আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, দ্রুত একটা বিল্ডিং সমাপ্ত করতে চাই। সেজন্য আমাদের কিছু মিস্ত্রি দরকার। আমরােএক মাসের মধ্যে বিল্ডিং শেষ করতে চাই। যাতে আমরা বৃহত্তর উৎপাদনে যেতে পারি।

আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস