নড়াইলে মানহানির অভিযোগে করা এক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেয়া স্থায়ী জামিন আদেশ প্রত্যাহার (রিকল) করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এসএম আবদুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন প্রশ্নে রুল যথাযথ ঘোষণা করে ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে স্থায়ী জামিন দিয়েছিলেন।
কিন্তু সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল যুগান্তরকে জানান, খালেদা জিয়ার জামিন আদেশ প্রত্যাহার করেছেন আদালত। বিকালে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিন বিষয়ে শুনানি করতে চান বলে আবেদন জানান। এর প্রেক্ষিতে আদালত জামিন আদেশটি প্রত্যাহার করেন। আগামী এপ্রিল মাসে (অবকাশের পর) এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি করা হবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।
তিনি বলেন, ওই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত জামিনে আছেন। আজ (বৃহস্পতিবার) রুল শুনানির জন্য ছিল। এই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত আছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম রাবেয়া।
জানতে চাইলে বিকালে সামিরা তারানুম রাবেয়া সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যাহ্ন বিরতির পর আদালত মৌখিক সিদ্ধান্ত রিকল করেন। কেননা রাষ্ট্রপক্ষের কাছে নথি ছিল না। খালেদা জিয়ার পক্ষে তখন আইনজীবী এ এইচ এম কামরুজ্জামান মামুন উপস্থিত ছিলেন। অবকাশ শেষে আদালত খোলার (২৯ মার্চ) এক সপ্তাহ পর হাইকোর্ট রুল শুনানির জন্য রেখেছেন।
২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট ওই মামলায় হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন ও রুল দেন আদালত। পরে গত জানুয়ারিতে জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানি শেষে রায় দিয়েছিলেন আদালত।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। উপস্থিত ছিলেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ও কায়াসার কামাল ও ফারুক হোসেন প্রমুখ।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করায় মানহানির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর নড়াইল সদর আমলি আদালতে মামলাটি করেন জেলার নড়াগাতী থানার চাপাইল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান রায়হান ফারুকী ইমাম।
ওই মামলায় নড়াইলের আদালতে গত বছরের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর হয়। এরপর ওই মামলায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়া ৯ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেন, যার ওপর ১৩ আগস্ট শুনানি হয়।
শুনানি শেষে খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ৩৬ মামলার মধ্যে ৩৪ মামলায় জামিনে আছেন। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে কারাবন্দি আছেন তিনি।