নিউজ ডেস্ক,
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টেলিফোন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এতথ্য জানান।
কাদের বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আমার সঙ্গে ফোনে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের এই আবেদনটা জানাতে বলেছেন মৌখিকভাবে। আমি সেটা ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি।
“আমি এটুকু বলতে পারি, এছাড়া কোনো লেনদেন বা এনিয়ে কোনো কথাবার্তা এসব আমাদের সাথে হয়নি। তলে তলে আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গেছে বলে কালকে টক শোতে শুনলাম। আমার মনে হয় বাস্তবে বিষয়টা তেমন কিছু নয়।”
তবে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে তার দল বা পরিবারের পক্ষ থেকে কারো কাছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা আইন মন্ত্রণালয়ে কোনো আবেদন করা হয়নি বলে জানান আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, “গতকাল পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা আইনমন্ত্রী কেউই বলেননি যে বিএনপি কিংবা পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো আবেদন পেয়েছেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন ও দলের লোকজন বিচ্ছিন্নভাবে বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে কথা বলছেন।
“তারা মুখে বলছেন, তারা মুক্তি চান, আবেদন করবেন, কিন্তু আবেদনটা লিখিতভাবে আসেনি।”
খালেদা জিয়ার দল কিংবা পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন পেলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে কাদের বলেন, “যদিটা পরে দেখা যাবে। তবে প্যারোলের আবেদন তারা করতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।”
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমি আগে থেকেই বলে আসছি, বেগম জিয়ার এই মামলাটি রাজনৈতিক মামলা নয়। সরকারের বিবেচনার বিষয়টা তখনই আসে, যখন বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনার হয়। দুর্নীতির মামলার সম্পূর্ণ এখন এখতিয়ার আদালতের।”
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে দুই বছর ধরে কারাবন্দি হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন প্যারোলের আবেদন জানাতে পারেন বলে গুঞ্জন থাকলেও কোনো আনুষ্ঠানিক আবেদন পায়নি।
খালেদার চিকিৎসা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “চিকিৎসা নিয়ে অমানবিক কোনো কিছু সরকার করতে পারে না। তাকে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সরকার অবশ্যই বিষয়টি মাথায় রাখে।
“তবে একটা বিষয় হচ্ছে তার শারীরিক অবস্থার বিষয়টা তার দলের লোকেরা যেভাবে বলেন, চিকিৎসকরা কিন্তু সেভাবে বলছেন না। চিকিৎসকরা চিকিৎসার ব্যপারে রিপোর্ট দেবেন। দলের লোকদের রিপোর্টের ওপর চিকিৎসার বিষয়টি কেন বিবেচনা করা হবে?”
মন্ত্রিপরিষদের রদবদল নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মন্ত্রিপরিষদের সকল বিষয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী কাজের সুবিধার জন্য সময়ে সময়ে রদবদল করতে পারেন, কারও দায়িত্বের পরিবর্তন ঘটাতে পারেন। তারা কেউতো বাদ যায়নি।”
শনিবারের দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দলের সংসদীয় বোর্ড আছে, স্থানীয় সরকার বোর্ড আছে। দুটি বোর্ডেরই যৌথসভা হবে।
“আগামীকাল ১৯ জনের যৌথসভা হবে। এই সভায় আমাদের কাছে কিছু রিপোর্ট আছে, নেত্রীর কাছে কিছু তার নিজস্ব ওয়েতেও তিনি খোঁজ খবর নিয়েছেন। গোয়েন্দা রিপোর্ট আছে, তাছাড়া সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার বোর্ড প্রত্যেক প্রার্থীকে নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন।”
অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবাহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন সেখানে ছিলেন।