ফাইল ছবি

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দেখতে যান তার পরিবারের ৬ সদস্য।

স্বজনরা বেরিয়ে এসে বলেন, তারা যে কোনো উপায়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি চান। খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ জানিয়ে জরুরি চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার কথা বলেন তারা। এ সময় তারা প্রয়োজনে প্যারেলে মুক্তি দিয়ে হলেও খালেদা জিয়াকে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলেন।

তবে এ বিষয়ে (প্যারোলে মুক্তি) কিছুই জানেন না বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার নয়াপল্টনে যৌথ সভাশেষে সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

এদিন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, উনার পরিবারের পক্ষ থেকে প্যারোলের জন্য আবেদন করা হয়েছে কিনা সেটি আমার জানা নেই। পরিবারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।

খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপি সব রকম চেষ্টা করছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সুপরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়াকে হত্যা করার জন্য কারাগারে জোর করে আটকে রেখেছে। আমরা তাকে বাঁচাতে চাই। তার মুক্তির জন্য সাংবিধানিকভাবে যতরকমের চেষ্টা করার আমরা সবই করছি। আইনগতভাবেও যতরকম পথ আছে সবরকম চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এটি আইনের মধ্যে নেই। সে জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তার মুক্তির জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া না দেয়ার পুরো ইচ্ছেটাই সরকারের হাতে। অন্যায়ভাবে তাকে গ্রেফতারের জন্য সরকারই দায়ী। এ ধরনের মামলায় সাত দিনের মধ্যে জামিন হওয়ার কথা। সাধারণ নাগরিকও সাত দিনে জামিন পায়। কিন্তু উনাকে দু’বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে যান পাঁচ স্বজন— সেজো বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতিমা, তার ছেলে অভিক এস্কান্দার, তারেক রহমানের স্ত্রীর বড় বোন শাহিনা জামান খান বিন্দু ও কোকোর শাশুড়ি ফাতিমা রেজা। প্রায় ঘণ্টাখানেক সেখানে অবস্থান করেন তারা।

সেখান থেকে বেরিয়ে এসে খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা প্রতিনিয়ত খারাপ হচ্ছে এবং সে জন্য তারা বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে হলেও তার মুক্তি চান।

সেলিমা ইসলাম বিবিসিকে বলেন, আমরা চাচ্ছি সরকার বিবেচনা করুক। যেভাবেই হোক, তাকে বিদেশে নেয়ার জন্য আমাদের পারমিশন দিক। প্যারোলে দিলেও দিতে পারে। কারণ তার অবস্থা খুবই খারাপ।

মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত আবেদনও পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে বলে জানান সেলিমা। তিনি বলেন, আবেদনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চেয়েছি। আর বলেছি যে, উনাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে। কারণ এটি মিথ্যা মামলা। সে জন্য আমরা নিঃশর্ত মুক্তির জন্য বলেছি।

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে এই প্রথম তার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হলো।

খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার আবেদনটি করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যারয়ের উপাচার্যের কাছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here