বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়া নতুন আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। মানুষের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসে চীনে এখন পর্যন্ত ৩৬১ জনে প্রাণহানি ঘটেছে। তাছাড়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা ১৭ হাজারের অধিক।

কেবল তাই নয়, চীনের সীমানা পেরিয়ে ভাইরাসটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আরও অন্তত ২৩টি দেশে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির চিকিৎসার ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেশ কিছু ভাইরাসনিরোধী ওষুধের সংমিশ্রণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিভাইরাল তৈরি করেছে। নতুন এই ওষুধগুলো ব্যবহার করে এরই মধ্যে আক্রান্ত এক রোগীকে সুস্থ করা হয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, মহামারীতে রূপ নেওয়া এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ৭১ বছর বয়সী এক চীনা নারীকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ও এইচআইভির চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের মিশ্রণ দেওয়া হয়। মূলত এর মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই চমকপ্রদভাবে সাফল্য দেখা যায়।

ক্রিয়েংসাক আত্তিপর্নানিচ নামে একজন থাই চিকিৎসক বলেছেন, আমি ভীষণ গুরুতর অবস্থার এক রোগীর চিকিৎসা করেছি। যা ফলাফল খুবই সন্তোষজনক। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত অবস্থায় থাকা রোগী উঠে বসেছেন মাত্র ১২ ঘণ্টা পরেই।

তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ল্যাব রেজাল্টও কেবল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পজিটিভ থেকে নেগেটিভ হয়ে গেছে।

থাইল্যান্ডের এই চিকিৎসক আরও জানান, তারা সেই রোগীকে অ্যান্টি-ফ্লু ওষুধ ওসেলটামিভির এবং এইচআইভির চিকিৎসায় ব্যবহৃত লোপিনাভির ও রিটোনাভিরের মিশ্রণ দিয়েছেন। তাই পদ্ধতিটি আরও ব্যবহার করা হবে কি না তা জানতে এবার দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।

এ দিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় মাত্র ১০ দিনে নতুন একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছে চীন। সোমবার থেকে রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটি উন্মুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর সিএনবিসি।

বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।

অপরদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here