জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক.
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সহ পরবর্তীযে কোন নির্বাচনে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের প্রচারে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ করতে পরিপত্র জারির জোর দাবি জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকার।
সোমবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের রিটার্নিং অফিসারের কাছে দেওয় নোটে ইউও নোটে (আন-অফিসিয়াল নোট) তিনি এ দাবি করেন ।
ঢাকা সিটির নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের নির্বাচনি প্রচারণা বা নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ সম্পর্কে বিভ্রান্তির প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন এই নির্বাচন কমিশনার।
নোটে মাহবুব তালুকদার বলেন, বিদ্যমান আচরণবিধি অনুযায়ী নির্বাচন সম্পর্কিত যে কোনো কমিটিতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। এই নির্বাচনি কার্যক্রম ঘরে বা বাইরে যে কোনো স্থানে হতে পারে।
“এবিষয়ে আচরণ বিধিমালা, ২০১৬-এর বিধান অত্যন্ত সুস্পষ্ট। সর্বাধিক দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এই বিধিমালা যারা প্রণয়ন করেছেন, তারাই এখন এর বিরোধিতা করছেন।”
তিনি আরো বলেন, বিধিমালা নিয়ে যাতে বিভ্রান্তির অবকাশ না থাকে সে জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনাসহ একটি পরিপত্র জারি করা ‘অত্যাবশ্যক’। না হলে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
“আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচনি আচরণবিধি কঠোরভাবে পরিপালন নিশ্চিত করতে না পারলে নির্বাচন কমিশন আস্থার সংকটে পড়বে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”
ইউও নোট বাকি তিন নির্বাচন কমিশনারকেও পাঠান তিনি।
এর আগে নির্বাচনি প্রচারণা ও নির্বাচনি কার্যক্রমে সংসদ সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন বলে গত ৯ জানুয়ারি দেওয়া ইউও নোটে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদকে আওয়ামী লীগের সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েলকে ঢাকা উত্তর এবং আমুকে ঢাকা দক্ষিণে মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতৃত্বে রেখেছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি দুই সাংসদের নির্বাচন পরিচালনায় থাকাকে আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করে আপত্তি জানিয়েছে।
এক সপ্তাহ পর শনিবার তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠকও করেন।
পরে সিইসি সাংবাদিকদের বলেছেন, সংসদ সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা স্থানীয় নির্বাচনের কোনো কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে পারবেন না। এমপিরা নির্বাচনী কার্যক্রম ও প্রচারণা করতে পারবেন না; ভোটের সমন্বয় করতে পারবেন না।
তোফায়েল-আমুর নেতৃত্বে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বৈধ কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি বলতে পারব না অফিসিয়ালি কারা আছে না আছে- তা তো আমি জানি না।…তারা আমাদের সঙ্গে বৈঠকে কারও পক্ষে-বিপক্ষে বলতে আসেননি, আইনের ব্যাখ্যা জানতে এসেছেন।”
তবে এই দুজনকে দলীয় প্রার্থীর ভোটের কাজে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার পক্ষে মত দিয়েছেন সিইসি।
তবে বৈঠক শেষে তোফায়েল সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়া ছাড়া সবই করতে পারবেন সংসদ সদস্যরা।