এম. জাফরান আদনান
অস্ট্রেলিয়ার বিশাল অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। এখন পর্যন্ত ৫০ কোটির বেশি প্রাণী মারা গেছে। আহত প্রাণীরা জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে যাওয়া চেষ্টা করছে, মানুষ দেখলেই জড়িয়ে ধরছে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য। দমকলকর্মীদের দেয়া পানি জীব জন্তুরা খাচ্ছে, এমন ছবিও দেখা গেছে।
বুনো আগুনের কারণে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। দমকা হাওয়ায় আগুন আরো ছড়িয়ে পড়ায় দক্ষিণপশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কোনো কোনো এলাকার আকাশ লালচে ও অন্ধকার হয়ে গেছে। শনিবার বহু এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, নতুন করে বেশ কয়েকটি জায়গায় আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। নিউ সাউথ ওয়েলস রুরাল ফায়ার সার্ভিসের (আরএফএস) কমিশনার শেন ফিত্জসিমন্স জানান, বিভিন্ন জায়গার আগুন একই সময়ে শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
’ব্যুরো অব মেটিওরোলজি জানায়, ‘ঝড়ো দখিনা হাওয়া উপকূলের দিকে ধেয়ে আসায় দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। উচ্চ তাপমাত্রা, আগুন ও বাতাসের তীব্রতার কারণে নিউ ইয়ার্স ইভে কয়েক হাজার মানুষ উপকূলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এবারের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদরা বলছেন, দাবানলে সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ৪৮০ মিলিয়ন স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি এবং সরীসৃপ নিখোঁজ হয়ে গেছে। এই সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলে দাবানলের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে ক্যাঙ্গারুরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য প্রাণী পুড়ে মরে গেছে। কাকাতুয়াসহ অনেক প্রজাতির পাখি মরে গাছের নিচে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। কোয়ালার মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মধ্যে পড়েছে কোয়ালা। কারণ এরা ধীরে ধীরে চলাফেরা করে। আর ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা খায়, যা তেলে ভরা থাকে। এতে এই গাছে আগুন বেশি জ্বলে।