নিজস্ব প্রতিবেদক.
এর চেয়ে দুর্দান্ত বোলিং আর কী করতে পারতেন ওয়াহাব রিয়াজ! নিজের প্রথম ১৪ বলে কোনো রান না দিয়ে তুলে নিলেন ৪ উইকেট! ঢাকা প্লাটুনের পাকিস্তানি পেসারের এমন বিধ্বংসী বোলিংয়ে রাজশাহী রয়্যালস এগোতে পারেনি স্বচ্ছন্দে, ঢাকার কাছে হেরেছে ৭৪ রানে।
ঢাকা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ওয়াহাবকে প্রথম আক্রমণে আনেন চতুর্থ ওভারে। ওপেনার লিটন দাসকে ফিরিয়ে শুরু। একই ওভারে অলক কাপালি আর শোয়েব মালিকও হন ওয়াহাবের শিকার। চতুর্থ ওভারের এই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি রাজশাহী। ১৩তম ওভারে ফিরে আরেক দফা তোপ দাগেন পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার। টানা ১৪টা ডট দিয়ে পান ৪ উইকেট। নিজের প্রথম ২ ওভারে তাঁর বোলিং বিশ্লেষণ— ১ মেডেন দিয়ে ১ রানে ৪ উইকেট। টিভিতে তাঁর এই বোলিং ফিগার ‘৪ রানে ১ উইকেট’ বলে দৃষ্টিভ্রম হওয়াটা মোটেও অস্বাভাবিক নয়!
ওয়াহাবকে দুহাত মেলে ওড়ার সুযোগটা করে দিয়েছিলেন তাঁর দুই সতীর্থ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও আসিফ আলী। ফিফটি পরে, তামিম ৩০ পেরোনো ইনিংস খেললেই দেখা যাচ্ছে জিতে যায় ঢাকা প্লাটুন! টুর্নামেন্টে বাঁ হাতি ওপেনার নির্দিষ্ট একটা ছকে এগোচ্ছেন। শুরুতে কোনো ঝুঁকি নিচ্ছেন না, এগোচ্ছেন ধীরলয়ে। হাত খুলছেন শেষ দিকে। খেলার ধরনটা দর্শকদের পছন্দ-অপছন্দ যেটাই হোক, তামিমকে ভীষণ কাজে দিচ্ছে।
মন্থর উইকেট, শুরু থেকেই বড় শট খেলা কঠিন। তামিম ওয়ানডে মেজাজে খেলে বাকি ব্যাটসম্যানদের সুযোগ করে দিচ্ছেন হাত খুলে খেলার। আজ সেই কাজটা ঠিকমতো করতে পেরেছেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার আসিফ আলী। তামিমের অপরাজিত ৬৮ রানের সঙ্গে আসিফ যোগ করেছেন ৫৫। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে তোলা ৪৬ বলে ৯০ রানের জুটি ঢাকাকে এনে দিয়েছে ৫ উইকেটে ১৭৪ রানের বড় স্কোর।
এবারের বিপিএলে রাজশাহীর সাফল্যের রহস্য ছিল ওপেনিং জুটি। গত তিন ম্যাচে আফিফ হোসেন ও লিটন দাস টানা তিনটি ৫০ ছাড়ান জুটি দিয়েছে। কাল বড় রান তাড়া করতে নেমে ৩৯ রানে ভাঙে লিটন-আফিফ জুটি। ওয়াহাব রিয়াজের দুর্দান্ত বোলিং ওপেনিং জুটি তো ভেঙেছেই। ভেঙেছে মিডল অর্ডারও। ৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে প্রায় একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন রাজশাহীকে। রাজশাহী ১৬.৪ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে করতে পেরেছে ১০০ রান। ৮ রানে ৫ উইকেট, ওয়াহাবের এ পরিসংখ্যান টুর্নামেন্টের সেরা।
তামিম-আসিফের ব্যাটিংয়ের পর ওয়াহাবের আগুনে বোলিংয়ে ম্যাচটা নিজেদের মুঠোয় নিয়ে শেষ চারের আশাও জাগিয়ে তুলেছে ঢাকা।