গত শুক্রবার বিয়ে করেছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী মিথিলা এবং কলকাতার বিখ্যাত এই পরিচালক সৃজিত মুখার্জী। সৃজিত গত ২০১০ সালে প্রথম সিনেমা নির্মাণ করা সৃজিত মুখার্জী গত ৯ বছরে অসাধারণ সব মুভি উপহার দিয়েছেন। জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তার মুভির একটা নিজস্ব স্টাইল রয়েছে। এবার দেখে নেওয়া যাক সৃজিতের মুভিগুলো :
২০১০ সালে ‘অটোগ্রাফ’ মুভিটি দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সৃজিত মুখার্জী। নবীন পরিচালক হলেও সিনেমাটিতে অভিনয় করেছিলেন খ্যাতিমান অভিনেতা প্রসেনজিত। সিনেমাটি ততটা নাম করতে না পারলেও পরের বছর বাজিমাত করেন সৃজিত। রিলিজ হয় বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্রাইম থ্রিলার ‘বাইশে শ্রাবণ’। প্রসেনজিত-পরমব্রত-রাইমা সেন অভিনীত সিনেমাটি ব্যাপক ব্যবসাসফল এবং জনপ্রিয় হয়েছিল। এখনও বিভিন্ন আলোচনায় এই মুভির নাম ঘুরে ফিরে আসে। ২০১২ সালে ‘হেমলক সোসাইটি’ এবং ২০১৩ সালে কাকাবাবু সিরিজের ‘মিশর রহস্য’ সৃজিতের পরিচিতি আরও বাড়িয়ে দেয়।
২০১৪ সালের শুরুতে সৃজিত দেখান তার ক্ল্যাসিক কারিশমা। রিলিজ হয় অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির গল্প নিয়ে নির্মিত মুভি ‘জাতিস্মর’। বিখ্যত গায়ক কবীর সুমনের জনপ্রিয় গানের ছায়ায় নির্মিত মুভিটি সর্বমহলের প্রশংসা অর্জন করে। ছবিটি চারটি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেয়। একই বছর মুক্তি পায় চতুর্মুখী প্রেমের রোমান্টিক থ্রিলার ‘চতুস্কোণ’। সিনেমাটির চেয়েও যেন এর গানগুলো বেশি জনপ্রিয়তা পায়। ‘সেরা চিত্রনাট্য’ এবং ‘সেরা পরিচালক’ ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেয় সিনেমাটি। ২০১৫ সালে সৃজিতের ভিন্নধর্মী কাজের উদাহরণ হিসেবে রিলিজ হয় ‘নির্বাক’। একই বছর দেশভাগ নিয়ে নির্মিত ‘রাজকাহিনী’ তোলপাড় ফেলে দেয়। পরবর্তীতে বলিউডে এই সিনেমাটি ‘বেগমজান’ নামে রিমেক হয়েছে।
২০১৬ সালে একটিই মুভি নির্মাণ করেছন সৃজিত। রোমিও-জুলিয়েট থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি নির্মাণ করেন ক্রাইম থ্রিলার ‘জুলফিকার’। টালিউডের প্রায় সব সুপারস্টার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বিগ বাজেটের এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন। পরের বছর সৃজিত আবার ফিরে যান কাকাবাবু সিরিজে। নির্মাণ করেন ‘ইয়েতি অভিযান’। গত বছর সৃজিতের ‘উমা’ মানুষের বিবেকে শক্ত আঘাত হানে। কানাডায় অন্টারিওর সেন্ট জর্জ শহরের বাসিন্দা ছোট্ট শিশু ইভান লিভারসেজের মৃত্যু এবং শেষ ইচ্ছা নিয়ে সত্য ঘটনা অবলম্বনে এক অসাধারণ মেলোড্রামা ‘উমা’।
২০১৮ সালে সৃজিতের শ্রেষ্ঠ কাজ ‘এক যে ছিল রাজা’। বাংলাদেশের বর্তমান গাজীপুর জেলার বহুল চর্চিত ভাওয়াল সন্ন্যাসীর মামলার ইতিহাস নিয়ে নির্মিত ‘এক যে ছিল রাজা’ ‘শ্রেষ্ঠ বাংলা ছবি’ হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেয়। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন যীশু সেনগুপ্ত এবং জয়া আহসান।
চলতি বছর মুক্তি পেয়েছে সৃজিতের সাইকো থ্রিলার ‘ভিঞ্চি দা’। ব্যাপক জনপ্রিয় ছবিটিতে প্লেব্যাক করেছেন বাংলাদেশের তরুণ কণ্ঠশিল্পী নোবেল। বছরের শেষ দিকে রিলিজ হয়েছে নেতাজী সুভাসচন্দ্র বোসের জীবনী নির্ভর সিনেমা ‘গুমনামি’। অনেক সমালোচনা এবং মামলার পরেও মুভিটি রিলিজ হয়েছে এবং সমালোচকদের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে। বর্তমানে সৃজিত ‘ফেলুদা’ ওয়েব সিরিজ নির্মাণে ব্যস্ত। আগামী বছর তার নতুন মুভি ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ আসার কথা রয়েছে, যেটি ‘বাইশে শ্রাবণ’ এর সিক্যুয়াল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here