এবিএম ইমরান: ২৩ জুলাই চট্টগ্রামের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সেমিনারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর পরিবেশবিদ নজরুল ইসলাম বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ৫৪ বছরের ভারতীয়-আওয়ামী বয়ান ও মুক্তিযুদ্ধের একচেটিয়া মালিকানার রাজনীতিকে ভেঙে দিয়েছে। সেমিনারের মূল প্রবন্ধে জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, “তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার” এবং “কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার”—এই ধরনের স্লোগানগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি বিকল্প রাজনৈতিক চেতনার বার্তা দিয়েছে, যা রাজাকার তকমা ব্যবহার করে জাতিকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করেছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫৪ বছর ধরে ভারতীয় প্রভাবিত আওয়ামী বর্ণনা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে। রাজাকার শব্দটি ব্রাহ্মণ্যবাদী ও ফ্যাসিস্ট শক্তির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা দিয়ে বিরোধীদের নিপীড়ন করা হয়েছে। কিন্তু জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন সেই মিথ্যা বয়ানের মুখোশ খুলে দিয়েছে।
অনুষ্ঠানটি নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমীন-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থাপিত প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন নগর জামায়াতের সেক্রেটারি সাংবাদিক মোহাম্মদ উল্লাহ, মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, ফয়সল মোহাম্মদ ইউনুস,শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নগর সভাপতি লুৎফর রহমান,ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী, নগর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইব্রাহীম রনি, অধ্যাপক মসরুর হোসাইন, চট্টগ্রাম-১১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর শফিউল আলম, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মনজারে খোরশেদ আলম, নগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান এলাহী, থানা আমীরদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আমীর হোসাইন, ফকরে জাহান সিরাজী সবুজ, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল হাসান রুমী, অধ্যাপক আলমগীর ভূঁইয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জুলাইয়ের আন্দোলন প্রমাণ করেছে যে দেশের মানুষ ও তরুণ সমাজ এখন আর বিভাজনের রাজনীতিকে মেনে নেবে না। তারা সত্যিকারের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়াতে প্রস্তুত। এই আন্দোলন একদিকে যেমন ভারতীয় প্রভাবমুক্ত জাতীয় রাজনীতির আহ্বান করেছে, তেমনি রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়েছে।
সেমিনারে বক্তারা আরও দাবি করেন, নতুন প্রজন্ম ইতিহাসকে নতুন চোখে দেখছে এবং মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে বিভাজন সৃষ্টি করা আর সম্ভব হবে না। জুলাইয়ের আন্দোলন তাই একটি নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা করেছে।
