ডিবি পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। তাকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
বৃদ্ধ নেতা আমির হোসেন আমু আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, ১৪ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং মুখপাত্র। তিনি জাতীয় নেতা, কিন্তু ঝালকাঠিতে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি ছিল।
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ১৬ বছরে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছিল জেলায়, যারা আমুর হয়ে জেলার সব ধরনের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ–বাণিজ্য, কমিটি গঠন, নির্বাচনী মনোনয়ন বিক্রি করত। এই চক্রের মাধ্যমে আমু হয়ে উঠেছিলেন ঝালকাঠির গডফাদার।
৫ আগস্ট ছাত্রদের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার গদি হারায় এবং শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেন। এরপর আমুর ঝালকাঠির বাড়িতে ক্ষুব্ধ মানুষ হামলা করে এবং আগুন লাগায়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ওই বাড়ি থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে। এর আগে আমু পালিয়ে যান। এরপর থেকে আমুর অবস্থান কেউ জানতো না।
গত ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশনায় তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করা হয়।
আমির হোসেন আমু ১৯৪০ সালের ১ জানুয়ারি তদানীন্তন বরিশাল ঝালকাঠি মহকুমায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৩ সালে মন্ত্রী পরিষদের রদবদলে তিনি ভূমি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।