পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে মজুরি বোর্ডের ৬ষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আজ। এ বৈঠকে মালিকপক্ষ মজুরির নতুন প্রস্তাব দেবে, অন্যদিকে শ্রমিকপক্ষ মালিকপক্ষের দেওয়া প্রস্তাব পর্যালোচনা করে তৎক্ষণাৎ নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে। আজকের বৈঠকে মজুরি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে।

এপ্রিলে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়। এ বোর্ড একাধিকবার বৈঠকে বসলেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ ৪র্থ বৈঠকে শ্রমিকপক্ষ ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়। পক্ষান্তরে মালিকপক্ষ থেকে ১০ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়, যা শ্রমিকপক্ষের প্রস্তাবের প্রায় অর্ধেক।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ন্যূনতম মজুরি ২৩-২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন আন্দোলনে রাস্তায় নামে। সাভার, মিরপুর, টঙ্গী, আশুলিয়া, গাজীপুর এলাকায় শতাধিক কারখানায় ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে মজুরি বোর্ডের ৫ম বৈঠক মজুরি প্রস্তাব আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায় মালিকপক্ষ।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শ্রম ভবনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে শাহজাহান খানের নেতৃত্বে শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মালিকপক্ষের দেওয়া প্রস্তাবকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয় বাজার দরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের সুপারিশ করবে।

একাধিক শ্রমিক নেতা ও বিজিএমইএ’র নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পোশাক খাতের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি এবং মালিকদের সামর্থ্য বিবেচনা করে নতুন প্রস্তাব দেওয়া হবে। এটি ১২ হাজার টাকার কমবেশি হতে পারে। শ্রমিকপক্ষ এখনো নিজেদের নতুন প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে পারেনি।

কারণ শ্রমিকপক্ষের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে একাধিক সংগঠন ও সাধারণ শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছে এবং বর্তমানে সেটি চলমান আছে। আজকের বৈঠকেই মজুরি চূড়ান্ত হবে। মালিকপক্ষ-শ্রমিকপক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছতে না পারলে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবে উভয় পক্ষ। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটি উভয় পক্ষ মেনে নেবে।

ইতোমধ্যেই বিজিএমইএ’র তরফ থেকে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের মজুরি পর্যালোচনা করতে মজুরি বোর্ড কাজ করছে। এই মজুরি বোর্ড নতুন যে বেতন কাঠামো ঘোষণা করবে, শিল্পে যত প্রতিকূলতাই থাকুক না কেন উদ্যোক্তা সেটিই মেনে নেবে। নতুন মজুরি কাঠামো আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।