ফিফা কর্তৃক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ নিষিদ্ধ হওয়ার প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সেই সময় বেড়েছে কয়েক দফায়।

অবশেষে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে ‘ভারমুক্ত’ লাগছে বলে জানিয়েছেন বাফুফের সহ-সভাপতি এবং তদন্ত কমিটির আহবায়ক কাজী নাবিল আহমেদ।

 

আজ (৩০ জুলাই) রোববার তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে বাফুফে নির্বাহী কমিটির কাছে। নিরপেক্ষভাবে এই তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাজী নাবিল আহমেদ। কোনও বাইরের চাপ ছিল না বলে দাবি তার। নাবিল বলেন, ‘আমরা যারা এখানে একসঙ্গে কাজ করেছি গত কয়েক মাসে, যে প্রক্রিয়া আমরা অনুসরণ করেছি, যেভাবে আমরা কাজটা করেছি, কাজটা ফেয়ারভাবে করার চেষ্টা করেছি আমরা। ’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু আমরা সবাই স্পোর্টসের লোক, সবাই যেহেতু ফেয়ার প্লেতে বিশ্বাসী, আমরা সেটা সেভাবেই করার চেষ্টা করেছি। আমরা আলোচনা করেছি, আমাদের প্রতিবেদনে আমরা সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট। বাইরে থেকে আমাদের অন্য কোনো সমস্যা হয়নি। নিজেরা মিলেই আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। অনেকটাই ভারমুক্ত মনে হচ্ছে। কোনো দায়ভার নয়, যে কোনো দায়িত্বই অনেক বড় প্রাপ্তি, সেটা আমরা ঠিকঠাক পালন করেছি আমাদের সবচেয়ে ভালো ইন্টেনশনের সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করেছি। ’

বাফুফের তদন্ত কমিটি ছিল ১০ জন সদস্য বিশিষ্ট। তবে দুই সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহী পদত্যাগ করায় আট সদস্য নিয়ে কমিটির কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। আজ সাত জনের স্বাক্ষরে প্রতিবেদন জমার কথা বলেন কমিটির আহ্বায়ক কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কমিটিতে ৮ জনের মধ্যে ৭ জন সই করেছেন। একজন করেননি। ’

তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নাবিল। আগামীতে বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটি প্রতিবেদন সম্পর্কে সকলকে জানাবে বলে জানিয়েছেন তিনি, ‘আমরা ফাইন্ডিংস যা পেয়েছি, সেটাই কিন্তু আমাদের রিপোর্টের পার্ট। সে কারণে এখানে আমরা কোনো কিছু বলতে পারছি না। সেটা নির্বাহী কমিটির এখতিয়ার। তারা সেটা বিবেচনা করবে। এরপর আমাদের কিছু বিষয় সবারই জানা হয়ে যাবে। তবে পুরোটা প্রকাশ করবে কি না, তা নির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। ’

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট কত পৃষ্ঠার? এমন প্রশ্নের জবাবে নাবিল বলেন, ‘অনেক লম্বা নয়। অনেক কিছু আগে থেকেই ছিল, ফিফার প্রতিবেদনে বিশদ ছিল। সেখানে যা বিশদ আছে, সেগুলো একই জিনিস পুনরাবৃত্তি করার তো কোনো অর্থ নেই। ওখানে লেখাই আছে ফিফা রিপোর্ট থেকেই আমাদের এই তদন্তটা। তো ফিফার অভিযোগের মধ্যেই কিন্তু আমাদের থাকতে হয়েছে। যে সব পয়েন্ট আমরা ছুঁয়েছি, সেসব তো বিস্তারিত ওখানে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। সাবজেক্ট-ম্যাটারে গেলেই কিন্তু আমাদের কাজটা হয়ে যাচ্ছে। এটা ছাড়াও আমাদের অন্য কিছু ডকুমেন্টস ছিল, যা হয়তো পরবর্তীতে বাফুফেতে সংরক্ষিত থাকবে। ’

ফিফা রিপোর্টের বাইরেও আরও কিছু তথ্য উঠে এসেছে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে। সেই বিষয়গুলোও উল্লেখ করার কথা জানিয়ে নাবিল বলেন, ‘আমাদের ফিফার আনীত অভিযোগেই থাকতে হয়েছে। তবে সেটার অনেক গভীরে আমরা গিয়েছি। সেটার আমাদের আরও অনেক ফাইন্ডিংস আছে। সুপারিশ আছে আমাদের কিছু। এই কমিটি করা হয়েছে বাফুফের কার্যক্রমকে শক্তিশালী ও আরও জোরদার করার জন্য। এমন প্রশ্ন যেন ভবিষ্যতে না আসে সেটা আমাদের এই কমিটি হোক, বা পরবর্তীতে অন্য কমিটিই হোক, তখন যেন ফিফা বা এএফসি থেকে আমাদের এমন দায়ভার যেন না আসে। ’