বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার অসংক্রামক রোগ ও ঝুঁকিগুলো নিয়ে এক গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলা হয়, উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ করে উচ্চ লবণাক্ত এলাকায় বসবাসকারীদের মধ্যে শতকরা ৬১ জন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।

শতকরা ৪০ জনের রক্তে মাত্রাতিরিক্ত শর্করা রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মারুফ হক খান শনিবার এই প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষ্যে বিএসএমএমইউ এদিন বেশ কয়েকটি বিষয়ে গবেষণা ফল প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার অসংক্রামক রোগ, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি, কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পেশা গঠন।

বিএসএমএমইউ’র শহিদ ডা. মিল্টন হলে দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সভায় এসব গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার অসংক্রামক রোগ, খাদ্য-স্বাস্থ্যে ঝুঁকি এবং কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক গবেষণার ফল উপস্থাপন করেন পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মারুফ হক খান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিজয় কুমার পাল ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিন। পরে মুক্ত অলোচনায় সবার জন্য সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক তার উপস্থাপিত গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলেন, ৫২ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্যসম্পর্কিত জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক মানের থেকে কম ছিল। এর মধ্যে ৫ শতাংশের জীবনযাত্রার মান অনেক খারাপ ছিল এবং ৪৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক ছিল।

সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামানের গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলা হয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য যেমন : পাউরুটি, কোমল পানীয়, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই এবং আচার পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এগুলোয় স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকতে পারে এমন উপাদান রয়েছে। যেমন : অতিরিক্ত লবণ, ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, সিসা, ট্রান্সফ্যাটি অ্যাসিড প্রভৃতি।

সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিজয় কুমার পালের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পেশা গঠনে বিশেষত্ব বাছাইয়ের প্রবণতা ও প্রভাবিত হওয়ার কারণ নিয়ে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১৬ সাল থেকে নারী শিক্ষার্থীর হার ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীর অনুপাত প্রায় সমান পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিন্তু নারী-পুরুষ উভয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাদের লিঙ্গপরিচয় অনুযায়ী বিশেষত্ব বাছাইয়ের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।

সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিনের কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ২২ জন কিশোর-কিশোরী। স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা বেশির ভাগই কিশোরী। কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো জেন্ডার রেসপন্সিভ হয়েছে। কিন্তু এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের গুণগতমান এবং স্থায়িত্ব বজায় রাখতে এখন কেন্দ্রগুলোকে জেন্ডার ট্রান্সফরমেটিভ অ্যাপ্রোচে কাজ করতে হবে।