চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এর সাবেক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের দায়িত্ব পালনের সময় কার্যক্রম দুর্নীতির জন্য কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। গত মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীকে প্রধান করে তিন সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষর করা অফিস আদেশে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন ১৮০ দিন দায়িত্ব পালন করেছেন। এই সময়ে ১৩টি সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তের জন্য তিন সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান হলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী ও সদস্য হলেন যুগ্ম সচিব নুমেরী জামান। সদস্যসচিবের দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে এসব অভিযোগ পাঠানো হয়েছে বলে অফিসে আদেশে উল্লেখ করা হয়। তবে কত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে তার সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি।

সাবেক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলোর রয়েছে, সিটি করপোরেশনের নিজস্ব পাম্প থেকে তেল না কিনে বন্ধুর পেট্রল পাম্প থেকে তেল ক্রয়। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি, প্রধান হিসাবরক্ষক থাকার পরেও বন্ধুর মেয়ের জামাইকে প্রধান হিসাব রক্ষক করা। বিনা দরপত্রে দোকান বরাদ্দ। বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়োগ দেওয়া ইত্যাদি।

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন অনেক অফিস আদেশে স্বাক্ষর করতে হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসকের দুর্নীতি তদন্তের বিষয়ে কমিটি গঠনের আদেশের কথা এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। রোববার অফিস খুললে নথিপত্র যাচাই করে দেখবেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক প্রশাসকের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি শুনেছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো অফিস আদেশ পাননি।

মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাবেক প্রশাসক ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠন করায় আমি খুশি। আমি কোনো অনিয়ম করিনি। গোপন কিছু করিনি। যা করেছি প্রকাশ্য করেছি। মানুষ আমার কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, অভিনন্দন জানিয়েছেন। কোনো গোষ্ঠী ঈর্ষান্বিত হয়ে ষড়যন্ত্র করতে পারে। তবে মন্ত্রণালয় তদন্ত করে দেখুক, আমি কোনো অনিয়ম করছি কি না।’