দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, কারিগরি স্কুল এবং কারিগরি কলেজগুলো শিক্ষক সংকট। বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী থাকলেও নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। এসব প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারিক জ্ঞান নিয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। তাই ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে ১৮ হাজার ৬৫৪ পদে নিয়োগ দেবে সরকার।এশিয়ার সিঙ্গাপুর, কোরিয়া, মালয়েশিয়ার উন্নতির পেছনে কাজ করেছে তাদের মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা। সিঙ্গাপুরে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতের হার ৬৫ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ৪০ শতাংশ। আর যুক্তরাজ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে এই শিক্ষায় শিক্ষিতের হার ১৭-৫৮ শতাংশের মধ্যে। এসব দেশের মানুষের বার্ষিক আয় ৭ হাজার থেকে ৪২ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি। তবে উল্টো চিত্র বাংলাদেশে। সরকারের দাবি, এ দেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতের হার ১৪ শতাংশ। বাংলাদেশে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে, সেই হারে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। তাই বিদেশের বাজার খুঁজতে হয়। কিন্তু সেখানে অদক্ষ শ্রমিকের কোনো মূল্য নেই। ইরাক, ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে আমাদের দেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ভালো চাহিদা থাকলেও আমরা দক্ষ জনবল তৈরি করতে পারছি না। যদিও সরকার ২০২০ সালের মধ্যে কারিগরিতে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (এসএসসি ও এইচএসসি সমমান) কোর্স এবং ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স রয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে নিয়মিত শিফটের সমসংখ্যক শিক্ষার্থী দ্বিতীয় শিফট চালু রয়েছে। ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে এসএসসি (ভোক) কোর্সে দ্বিতীয় শিফট কার্যক্রম চালুসহ ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ার্স কোর্স চালু করা হয়েছে।
দেশের ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দীর্ঘদিন ধরে আসন সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৫২৮টি। পলিটেকনিকেই ডাবল শিফট চালুর পর দুই শিফটে ভর্তি করা হয় প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও শিক্ষকসংখ্যা বা অবকাঠামো সুবিধা বাড়েনি। শিক্ষকের অভাবে ক্লাস নিতে পারছে না প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। ব্যবহারিকের ক্লাস এসব শিক্ষার্থীর কাছে স্বপ্নের মতো। ফলে কোর্স শেষে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা সনদ পেলেও বাস্তবে তারা অদক্ষই থেকে যাচ্ছে। আর অস্থায়ী শিক্ষক দিয়েই চলছে সরকারি ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে ১৮ হাজার ৬৫৪ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে তিনি জানান।