বাংলাদেশে মহামারী করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষদের সাহায্যের জন্য ত্রাণ তহবিল গঠন করেছিলেন আলোচিত ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ফান্ড গঠনের বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেন তিন। রোববার (১৯ এপ্রিল) তিনি তার পেজে জানিয়েছেন মাত্র সাতদিনে সর্বমোট একাত্তর লাখ পঁচিশ হাজার আটশত একাশি (৭১,২৫,৮৮১) টাকা অনুদান এসেছে।
আজহারীর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
“রমজান ফুড প্যাক” এর তহবিল সংগ্রহের জন্য আমরা সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম। এই সাতদিনে তহবিলে (দুটি ব্যাংক একাউন্ট ও দুটি বিকাশ) সর্বমোট একাত্তর লক্ষ পঁচিশ হাজার আটশত একাশি (৭১,২৫,৮৮১) টাকা অনুদান এসেছে।
প্রাপ্ত অনুদানের মাধ্যমে, সকলের সার্বিক সহযোগিতায়, বাংলাদেশের আটটি বিভাগের সর্বমোট ৩৫টি জেলায়, প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার দরিদ্র পরিবারের হাতে আমরা “রমজান ফুড প্যাক” পৌছেঁ দিচ্ছি। বেশীর ভাগ জেলাগুলোতেই বিতরণ কার্যক্রম শেষ। যে কয়টি জেলা এখনো বাকী আছে সেগুলোও রমাদানের আগেই সম্পন্ন হবে ইনশাআল্লাহ। এই মানবিক উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করতে পারায়, আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার সুমহান দরবারে মস্তকাবনত চিত্তে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
সারা বিশ্ব একই সাথে লকডাউন থাকার কারনে, দেশে বিদেশে অনেক জায়গায় ব্যাংক ও বিকাশ বন্ধ থাকায়, অনেকেই অনুদান পাঠানোর ইচ্ছা থাকা সত্বেও পাঠাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি, মাত্র দুটি বিকাশ নাম্বার হওয়ায়, বারবার সেগুলো লিমিট ক্রস করায়, অনেক অনুদান গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। গত সাত দিন যাবৎ, টানা ২৪ ঘন্টা এই নাম্বার দুটোতে অনবরত ফোন আসায়, সব গুলো ফোন রিসিভ করাও সম্ভব হয়নি। এজন্য আমরা দু:খ প্রকাশ করছি। তবে, আমাদের আন্তরিকতায় কোন ঘাটতি ছিল না। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।
“রমজান ফুড প্যাক ২০২০” এর ভিতরে আমরা যা রেখেছি:
চাল ৫ কেজি
ডাল ২ কেজি
আলু ২ কেজি
পেঁয়াজ ২ কেজি
তেল ২ কেজি
ছোলা ১ কেজি
চিনি ১ কেজি
লবন ১ কেজি
মুড়ি ৫০০ গ্রাম
খেজুর ৫০০ গ্রাম
ডেটল সাবান ২ টি
লকডাউনের কারণে পন্যের অপর্যাপ্ততায়, কয়েকটি জেলায় আইটেমে সামান্য কিছু কমবেশি হতে পারে। তবে, বেশীরভাগ জেলাতেই হুবহু একই ফুড আইটেম মেনটেইন করা হয়েছে।
আমি দেশে না থাকায়, সরেজমিনে ও স্বশরীরে প্রজেক্টের কাজ পর্যবেক্ষণ করতে না পারলেও, সার্বক্ষণিক কো-অর্ডিনেটরদের সাথে ফোনে ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সামগ্রিক কার্যক্রম মনিটরিং করেছি এবং প্রয়োজনীয় সকল দিক নির্দেশনা দিয়েছি। আর্থিক সকল হিসাবের পরিপূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখতে, পুরো সাত দিনের বিকাশ নাম্বার দুটোর মানি ট্রান্সফার লিস্ট, একাউন্ট দুটোর সাত দিনের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, খরচের সকল মানি রিসিপ্ট, ভাউচার, পে-স্লিপ, লজিস্টিক মিসসেলিনিয়াস, ফুড প্যাক প্রাপ্তদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি কালেক্ট করে, ডকুমেন্টারি ফাইল আকারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
“রমজান ফুড প্যাক” প্রজেক্টের সম্মানিত প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটরদ্বয়, জেলা পর্যায়ের কো-কোঅর্ডিনেটরবৃন্দ, সকল টীম মেম্বার এবং সেচ্ছাসেবক ভাইদের বোনদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুকরিয়া। আপনাদের নিরলস আন্তরিক পরিশ্রমের ফলেই পুরো প্রজেক্টটি সুন্দরভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আপনাদেরকে এর উত্তম প্রতিদান দিক। আর, জাতীয় এ দুর্যোগ কালে বিপদগ্রস্থদের পাশে আর্ত মানবতার সেবায় যারা এগিয়ে এসেছেন, তাদের এই অনুদানকে আল্লাহ তায়ালা আখিরাতের মুক্তির মাধ্যম বানাক। আমিন।
বিভিন্ন জেলায় “রমজান ফুড প্যাক” বিতরণের কিছু খন্ডচিত্র নিচে আপলোড করা হল। ইচ্ছা করেই ফুড প্যাক প্রাপ্ত কারো চেহারা দেখানো হয়নি।
আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস