শেখ সালাউদ্দিন,সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি:
সীতাকুণ্ডে বহিরাগতদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে ।ফৌজদারহাটে নতুন করে একব্যক্তি করোনা
শনাক্ত হয়েছেন ।

এনিয়ে মোট দুজন সীতাকুণ্ড উপজেলায় করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়।ফলে বিষয়টি
স্থানীয়দের মাঝে চরম আতংকের করণ হিসেবে দাড়িয়ে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সরকার বারবার নির্দেশনা জারি করছেন। দেশের মানুষ যে যেখানে অবস্থান করছে তাকে সেখানেই লকডাউনেথাকার জন্য বললেও অনেকেই তা মানছে না।

বিশেষ করে কোথাও সংক্রমন ঘটলে সেই এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় প্রবেশ না করতে। কিন্তু এ সংক্রমন থেকে বাঁচার জন্য সেখান থেকে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে অনেকে।

এতেকরে সংস্পর্সে এসে সংক্রমন সবর্ত্রই ছড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন করোনা ভাইরস ঠেকাতে প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় লকডাউনের নির্দেশনা দিয়েছে।

অনেকে আবার স্বেচ্চায়ও নিজ এলাকায় লকডাউন করে রেখেছে। কিন্তু এত কিছুর পরও বহিরাগত মানুষের আগমন ঘটছেই।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এখনো নিয়মিতই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ এসে অবস্থান করছে। এতেকরে তাদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস দ্রুত ছড়ানোর আশংকা করছেন এলাকাবাসীসহ অনেকেই।

এলাকাবাসী জানান, সীতাকুণ্ড পৌরসদর, বাঁশবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিনে ৬-৭ জন লোক এসে উপস্থিত হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই এসেছে ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে।

আর অন্যরা ঢাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে পৌরসদরের গোডাউন রোডে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা একজন ব্যাংকের আমস্ গার্ড অসুস্থ অবস্থায় তিনি বাজার, আশপাশের এলাকা ঘোরাফেরা করে।পরে হাসপাতালে পরীক্ষায় শেষে তার করোনা প্রজেটিভ ধরা পড়ে। এরপর ঐদিন থেকে পৌরসভাস্থ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতংক দেখা দেয় ।

পৌরসদর বাজার এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, গোডাউন রোডের ভাড়াটিয়া (৫৫) কাজ করতেন
নারায়ণগঞ্জের একটি ব্যাংকে। সেখানে তিনি অসুস্থবোধ করার পর চলে আসেন সীতাকুণ্ডে।
এখানে এসেই তিনি অবাদে ঘোরাফেরা করেছেন। পরীক্ষার পর তিনি করোনায় আক্রান্ত প্রমাণিত হলেন।

তার সংস্পর্সে অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে কিনা বোঝা ‍মুস্কিল। সবার একই কথা তিনি এসেই এখানে করোনা ছড়িয়েছে। সরকার বারবার প্রচার করেছে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে থাকার জন্য।

কিন্তু তিনি সরকারের নির্দেশ অমান্য করে সীতাকুণ্ডে চলে আসেন রোগ ছড়ানোর জন।

বর্তমানে তার ভুলের কারণে পৌরসদরের গোডাউন রোডের ৬টি বাড়ি ও ৩টি দোকান লকডাউন করে দেন প্রশাসন।ঘটনার পর চরম আতংকিত হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষ বহিরাগতরাও ।

পৌরসদরের ভোলাগিরি এলাকায় আরো এক ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।

খবর পেয়ে প্রশাসন ঐ বাড়ির লোকদের ১৪দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ প্রদান করে এসেছেন।

এদিকে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত আলী জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের জানান, তার এলাকার ২নং ওয়ার্ড আলম পুকুর পাড়, ৪নং ওয়ার্ড আবুনগর শামছু সওদাগর বাড়িতে ৪ জন বহিরাগত এসেছেন।

তাদের মধ্যে দুইজন এসেছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে। আর বাকি দুজন এসেছেন ঢাকা হতে। তিনি তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন।

এভাবে আরো বিভিন্ন স্থানে বহিরাগতরা এসে ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছেন বলে জানান সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ উপজেলায় আগে করোনা আক্রান্ত কেউ ছিলানা। কিন্তু একজন নারায়ণগঞ্জ থেকে সীতাকুণ্ডে এসেছেন যার মধ্যে করোনা প্রজেটিভ পাওয়া গেছে।

তাই আমরা ধারণা করছি তিনি সেখানেই আক্রান্ত হয়ে এসেছেন,বহিরাগতদের মাধ্যমে এভাবেই ক্রমশ করোনা ছড়ায়।

তিনি আরো বলেন, বারবার আমরা বলছি যে যেখানে আছেন সেখানেই যেন থাকেন তারা । কিন্তু কেউ এসব কথা মানতে চান না। একজন করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও মানুষ যেভাবে চলাচল করছে তাতে তো সমস্যা বাড়তেই পারে।

এদিকে সীতাকুণ্ড ফৌজদারহাট এলাকায় নছিম(৪৫)নামের একব্যক্তি করোনা শনাক্ত হয়েছে। (১২ এপ্রিল)রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে এ ভাইরাস শনাক্ত করা হয়।

ফৌজদারহাট ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোস্তাকিম আরজু বলেন,মরহুম হাবিবুর রহমানের প্রত্র মোঃ নছিম চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী সাগরিকা এলাকায় বসবাস করে আসছেন ।

গত (১১এপ্রিল শনিবার)দুপুর বেলা তিনি নিজ গ্রামের বাড়ি ফৌজদারহাট মৌলভী এয়াকুব বাড়ি গ্রামে আসলে, তখন এলাকাবাসী তাকে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)পাঠিয়ে দেন করোনা পরীক্ষার জন্য।

আজ (১২এপ্রিল)রাত ১০টার দিকে তার করোনা পরীক্ষায় প্রজেটিভ আসে। মেম্বার আরো বলেন, যেখানে
নছিম থাকতেন সাগরিকা এলাকায় তার বিল্ডিং ও এক গার্মেন্টস কর্মি করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল ।

এদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ নতুনকরে ফৌজদারহাট এলাকায় করোনা শনাক্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here