নিউজ ডেস্ক,

হিজড়াদের সরকার তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এখন তারা দেশের স্বাভাবিক নর-নারীর মতো অন্যান্য নাগরিক সুবিধাও ভোগ করবে বলে ধরে নেওয়া যায়। তবে হিজড়া সন্তানরা বাবা-মায়ের অন্য সন্তানের মতো তাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে কি না তা জানা যায় না।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘পিতা-মাতা এবং আত্মীয়স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং পিতা-মাতাও আত্মীয়স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে, উহা অল্পই হোক অথবা বেশিই হোক, এক নির্ধারিত অংশ।’ (সূরা নিসা, আয়াত ১৭৬ পারা-৪)
সম্পত্তির পরিমাণ নির্ধারণ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিতেছেন: এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান, কিন্তু কেবল কন্যা দুই-এর অধিক থাকিলে তাহাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ, আর মাত্র এক কন্যা থাকিলে তাহার জন্য অর্ধাংশ। তাহার সন্তান থাকিলে তাহার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক ষষ্ঠাংশ, সে নিঃসন্তান হইলে এবং পিতা-মাতাই উত্তরাধিকারী হইলে তাহার মাতার জন্য এক-তৃতীয়াংশ, তাহার ভাইবোন থাকিলে মাতার জন্য এক ষষ্ঠাংশ; এসবই সে যাহা ওসিয়ত করে তাহা দেওয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও সন্তানদের মধ্যে উপকারে কে তোমাদের নিকটতর তাহা তোমরা অবগত নহ। ইহা আল্লাহর বিধান; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা নিসা, আয়াত ১৭৬ পারা-৪)।

হিজড়াদের সম্পত্তির অধিকার সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে কোথাও কিছু বলা হয়নি। হিজড়ারা নিজের ইচ্ছায় হিজড়া হয়ে জন্ম নেয়নি। একই পিতার ঔরসজাত এবং মাতৃগর্ভে জন্ম নিয়ে অন্য সন্তানরা যে সুখ-সুবিধা কিংবা উত্তরাধিকারের অধিকার ভোগ করবে, হিজড়া সন্তানেরা তা থেকে কী অপরাধে বঞ্চিত হবে? আমি কয়েকজন ইসলামি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাঁরা আমাকে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। একজন বিশেষজ্ঞ আমাকে বলেছেন, দাড়ি-গোঁফওয়ালা হিজড়াদের পুরুষ এবং দাড়ি-গোঁফ বিহীন হিজড়াদের নারী বলে ধরে নেওয়া যায়। তাঁর বক্তব্য মেনে নিলে হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ বলার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। হিজড়া সন্তানরা উত্তরাধিকারী সূত্রে তাদের জন্মদাতা বা জন্মদাত্রীর পরিত্যক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারবে না এমন কথাও পবিত্র কোরআনের কোথাও উল্লেখ করা হয়নি।

পরিশেষে, সরকার যদি তাদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দিতে পারে, তবে একই যুক্তিতে হিজড়ারা বাবা-মায়ের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারবে কি না এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানা প্রয়োজন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here