জনপ্রিয় ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদি এবং তার বাবা ও মাই টিভির কর্ণধার নাসিরুদ্দিন সাথীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি গুরুতর সব অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ‘ইলিয়াস হোসেন’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী ভিডিওতে তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে অনলাইন মাফিয়া চক্র পরিচালনা, ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্যাতন, নারী কেলেঙ্কারি, হত্যাচেষ্টা এবং চ্যানেল দখলের মতো ভয়ংকর সব অপরাধ।
তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে যত অভিযোগ:
অনলাইন মাফিয়া চক্র: আফ্রিদিকে ‘অনলাইন মাফিয়া’ হিসেবে উল্লেখ করে ভিডিওতে বলা হয়, তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার কথা না শুনলে বা তার দলের হয়ে কাজ না করলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ভয় দেখিয়ে নির্যাতন করা হতো।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও নির্যাতন: ডিবি, এসবি, সিআইডি-সহ বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে আফ্রিদি ক্ষমতার অপব্যবহার করতেন। ব্লগার সায়েমকে ঢাকার ইসিবি চত্বরে নিয়ে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটর স্বপন আহমেদকে নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
নারী কেলেঙ্কারি: বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক এবং পরে তাদের হুমকি দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে আফ্রিদির বিরুদ্ধে।
হত্যাচেষ্টা মামলা: আফ্রিদির বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডা থানায় দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে বলে ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়।
বাবা নাসিরুদ্দিন সাথীর অপরাধনামা:
চ্যানেল দখল ও প্রতারণা: তৌহিদ আফ্রিদির বাবা নাসিরুদ্দিন সাথীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে মাই টিভি চ্যানেলটি দখল করার অভিযোগ আনা হয়েছে। চ্যানেলের প্রতিষ্ঠাতা বিলকিস বেগমকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়।
চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেলিং: মাই টিভিতে ‘মুখোশ’ নামের একটি ক্রাইম প্রোগ্রামের মাধ্যমে নাসিরুদ্দিন সাথী চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এসকে লিটন এবং মুজিবের মাধ্যমে তিনি ব্ল্যাকমেলিং করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
বর্তমান পরিস্থিতি:
সম্প্রতি একটি শিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টা মামলায় নাসিরুদ্দিন সাথী ও তৌহিদ আফ্রিদি আটক হলেও, তারা জামিনে বেরিয়ে আসার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। মামলার বাদীকে চাপ দেওয়া এবং মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিজেদের পক্ষে আনার চেষ্টাও করছেন বলে ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে।
এইসব অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এই অভিযোগগুলো কতটা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে چه পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
