৫৫ বছরেও শ্রমিকবান্ধব বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়া সম্ভব হয়নি: আ.ন.ম. শামসুল ইসলাম

এবিএম ইমরান: বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আ.ন.ম. শামসুল ইসলাম বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো একটি বৈষম্যহীন ও শ্রমিকবান্ধব রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।

আজ সকালে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরীর ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচন দেশের পুনর্গঠনের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। দীর্ঘ ১৬ বছর পর মানুষ ভোটাধিকার ফিরে পেতে যাচ্ছে। আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। সেই নির্বাচনের মাধ্যমেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গঠনের পথ নির্ধারিত হবে।”

শামসুল ইসলাম আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসনের ১৬ বছরে শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত হয়েছে। ২০২৪ সালের গণআন্দোলনে শ্রমিকরা ছাত্রদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রক্ত দিয়েছে। সেই ত্যাগ তখনই সার্থক হবে, যদি আমরা সবাই মিলে একটি ইনসাফভিত্তিক, শ্রমিকবান্ধব বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি। সেই লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে ইনসাফের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’র পক্ষে গণম্যান্ডেট দিতে হবে। শ্রমিকরা এই গণজোয়ার গঠনে স্মরণীয় ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ।”

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি এস.এম. লুৎফর রহমান এবং সঞ্চালনায় ছিলেন মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আহছানুল্লাহ ভূঁইয়া, পরিবেশবিদ নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক জাফর সাদেক ও ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইসহাক।

বক্তারা বলেন, দেশের প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে শ্রমিকরা সাহসিকতার সঙ্গে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। অথচ তাদের ন্যায্য অধিকার ও সম্মান আজও নিশ্চিত হয়নি। তারা রাষ্ট্র, সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে উপেক্ষিত। এই অবস্থা পরিবর্তনে শ্রমিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ইনসাফ ও ন্যায়ের পক্ষে শক্তিশালী অবস্থান নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে এস.এম. লুৎফর রহমান বলেন, আওয়ামী সরকারের আমলে শ্রমিক লীগ ছিল টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও বদলি বাণিজ্যে লিপ্ত। শিল্প কারখানায় প্রশাসনিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে শ্রমিকরা চরমভাবে বঞ্চিত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর, তেল ও রেল সেক্টর ছিল দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। সিবিএ দখল করে শ্রমিক নির্যাতন করা হয়েছে। বিআরটিএ ও বিআরটিসিকে শ্রমিক হয়রানির কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে।

তিনি দোকান ও হোটেল শ্রমিকদের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, সাপ্তাহিক ও জাতীয় ছুটি কার্যকর করার দাবি জানান।

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগরীর সহ-সভাপতি নজির হোসেন, মকবুল আহম্মেদ ভূঁইয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শিহাবউল্লাহ, অধ্যক্ষ আসাদ উল্লাহ আদিল, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুন্নবী, ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

সম্মেলনের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, অফিস সম্পাদক স.ম. শামীম, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মজুমদার, প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম ও আইন আদালত সম্পাদক সাব্বির আহমদ উসমানী প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here